সাকিব আল হাসানকে ছুটি ঠিকই দেওয়া হলো। তাতে এই প্রশ্নটিও ওঠে যে তাহলে কয়েক দিন ধরে এত কিছুর দরকার কী ছিল? অনেক আগেই আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে চান না বলে বিসিবিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে রেখেছিলেন এই অলরাউন্ডার। তবু সাকিবকে রেখে নিউজিল্যান্ডগামী টেস্ট দল ঘোষণার পর জানা যায়, বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে তাঁকে। চিঠি দিয়ে সেটি তিনি সঙ্গে সঙ্গেই জানানও। এরপর এক দিন সময় নিয়ে গতকাল ঢাকার এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি জানালেন, দলের সেরা ক্রিকেটারের ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
কিন্তু মৌখিকভাবে জানানোর পরপরই তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়ার কথা বলা যেত। তা না করে দল ঘোষণার পর বলা এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ মিলিয়ে পরিবেশটা ঠিক স্বস্তিকরও থাকেনি। অবলীলায় তা এড়ানো যেত। গেলে ক্রিকেটার আর ক্রিকেট প্রশাসনের সমন্বয়হীনতাও এমন প্রকাশ্য হয়ে উঠত না। বিষয়টি এ রকম বিব্রতকরও হতো না। যদিও নাজমুল এটিকে সেভাবে দেখছেন না। বরং যেভাবে দেখছেন, তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সাকিবকে দিয়ে অন্যদের কাছেও জোরালো এক বার্তাই পৌঁছে দিতে চাইছেন তিনি, ‘না, না, বিব্রতকর নয়। অনানুষ্ঠানিকভাবে আমরা জানতাম। ব্যাপারটি হচ্ছে, এত দিন ধরে সব কিছু অনানুষ্ঠানিকভাবেই হয়ে আসছে। যার কারণে অনেক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এটি যাতে না হয়, সে জন্যই জোর দিয়ে বলা হচ্ছে যেন তারা (ক্রিকেটাররা) আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।’
অবশ্য কাউকে ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিসিবির কোনো আপত্তি নেই বলেও নিশ্চিত করতে চাইলেন নাজমুল, ‘আমি তো আগে থেকেই বলে আসছি যে কেউ যদি ছুটি চায়, খেলতে না চায়, বিশ্রাম চায়, বিরতি চায়, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সেটি আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে।’
শুধু জানালেই হবে না, বিসিবি সভাপতি চান বিষয়টি তাঁদের আগেভাগেই জানানো হোক। তাই নতুন এক নিয়ম করে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানালেন, ‘যে জিনিসটির ওপর আমরা জোর দিচ্ছি, আমরা আগাম জানতে চাই (কারো কোনো সফরে যেতে না চাওয়া)। হঠাৎ করে একটি সিরিজের আগ মুহূর্তে হলে আমাদের জন্য সমস্যা হয়ে যায়। কাজেই আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা একটি নিয়ম করে দিতে যাচ্ছি। কারো যদি বিশ্রাম ও বিরতি লাগে, তাহলে যেন আমাদের আগেই জানায়। তাহলে আমরা অন্য খেলোয়াড়কে তৈরি করতে পারব।’
যদিও নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে সাকিবের অনিচ্ছার কথা বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’ই। চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে না জানালেও এমনকি দল গঠনের সময়ও বিষয়টি অজানা ছিল না নির্বাচকদের। এক নির্বাচকই নিউজিল্যান্ড সফরে যাবেন কি না জানতে চেয়ে সাকিবকে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন। তখনো এই অলরাউন্ডার ফিরতি মেসেজে আরেকবার জানান তাঁর সিদ্ধান্ত। যাবেন না জানার পরও তাঁকে দলে রাখা হয়। সেই দল ঘোষণার দুই দিন পর সাকিবের ছুটি মঞ্জুর করতেই হলো। তবে তাঁর বিষয়টি এবার ভিন্ন বলেই মনে হয়েছে বিসিবি সভাপতির, ‘যার বিশ্রাম প্রয়োজন, তাকে তো বিশ্রাম দিতেই হবে। সে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হোক আর না হোক। তবে সাকিবের ব্যাপারটি ভিন্ন। ও তো চোট পায়নি বা বিশ্রামও চায়নি। পারিবারিক কারণে বিরতি চেয়েছে।