আজারবাইজান ও ইরানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ইরান অভিযোগ তুলেছে, আজারবাইজান সরকার গোপনে ইসরাইলি বাহিনীকে আশ্রয় দিয়েছে। তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে বাকু।
গত সপ্তাহে ককেশাস অঞ্চলের মিত্র দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ইরান, আজারবাইজান সীমান্তে বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরু করেছ ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী দেশটির অভিযোগ, আজারবাইজান ইহুদি সেনাদের আশ্রয় দিয়েছে।
তবে সোমবার আজারবাইজান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেইলা আব্দুল্লাইভা বলেন, আজারবাইজান-ইরান সীমান্তে কোনো তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি নেই। ইরানের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
গত বছর নাগোর্নো কারবাখ নিয়ে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ জড়ায় আজারবাইজান। যুদ্ধক্ষেত্রে আজারবাইজান ইসরাইলের তৈরিকৃত কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে। এটা দেখে ইরান ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
কৌশলগত কারণে ইসরাইল ককেশাস অঞ্চলের আজারবাইজানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলে। তেল আবিব আজারবাইজানকে সামরিক সরঞ্জাম, ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি দিয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই গত বছর আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে সফলতা পায় আজেরি বাহিনী।
২০০৯ সালে উইকিলিকসের ফাসকৃত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের নথিতে দেখা যায়, আজারবাইজান ও ইসরাইল ইরানকে অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে। এ কারণে দেশ দুটি গভীর সম্পর্ক রক্ষা করে চলে।
গত মাসে আজারবাইজান, তুরস্ক ও পাকিস্তান বাকুতে সামরিক মহড়া দেয়। এই ঘটনার পর ইরান আজারবাইজান সীমান্তে রেভ্যুলশনারী গার্ড বাহিনী মোতায়েন করে।
এছাড়া একই সময়ে কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজান ইরানের গাড়ির ওপর রোডট্যাক্স আরোপ করে। এছাড়া ইরানের দুইজন লরি ড্রাইভারকেও আটক করে আজারবাইজান। এরপর দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়,দেশটির উত্তরপশ্চিম আজারবাইজান সীমান্তে যুদ্ধবিমান, কামান, হেলিকপ্টার ও সেনা জড়ো করছে ইরান। ইরানের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেন, যেকোনো দেশ নিজ দেশের যে কোনো জায়গায় সামরিক মহড়া দিতে পারে, এটা তাদের সার্বভৌম অধিকার। কিন্তু ইরান এই সময়ে কেন সামরিক মহড়া দিচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আজারবাইজান সীমান্তে মহড়া সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। সীমান্তে তেহরান কোনো ইহুদি শাসন বরদাস্ত করবে না।
ইরান ও আজারবাইজানের প্রায় ৭০০ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এছাড়া ইরানে বেশ সংখ্যক (১৬ শতাংশ) আজেরি নৃগোষ্ঠীগত জনসংখ্যা রয়েছে যারা দেশটির উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে বসবাস করে।