ব্যাটসম্যান ফিন অ্যালেন পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারেন, এমন ভয় ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। দলের ‘পথের কাঁটা’ হিসেবে ভাবা হচ্ছিল তাকেই।
করোনামুক্ত হয়ে ফিরে এসে প্রথম ম্যাচে ভালো শুরুও পেয়েছিলেন তিনি। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচে আরও বিধ্বংসী রূপে তিনি। সাকিবকে রিভার্স সুইপে মিড উইকেট দিয়ে যে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তা গ্যালারিতে আঁছড়ে পড়ে। পরের ওভারে রিভার্স সুইপে ৩ রান আদায় করেন। কিন্তু নাসুম প্রতিশোধ নিয়ে নেন ওই ওভারেই।
আবার অ্যালেন রিভার্স সুইপ করেন। এবার কিছুটা জোরে বল করেন নাসুম। টাইমিং মেলাতে না পারে পয়েন্টে ক্যাচ দেন কিউই ব্যাটসম্যান। ‘পথের কাঁটা’ দূর করে নাসুম কীভাবে সফল হলেন ম্যাচ শেষে সেই রহস্য জানালেন।
তিনি বলেন, “ফিন যখন রিভার্স সুইপ করছিল তখন রিয়াদ ভাই আমাকে বলল, ‘ও রিভার্স করলে তুই আরেকটু আস্তে বল করবি।’ আমি যখন বোলিং করছি তখন দেখলাম ও একটু আগেই ঘুরে গেছে, ওটা দেখে আমি জোরে বল করেছি তাতে মিস টাইমিংয়ে উইকেটটা পেয়ে গেছি।”
৪ ওভারে মাত্র ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নাসুম বাংলাদেশের সিরিজ জয়ী ম্যাচের নায়ক। তার নেওয়া উইকেটগুলোর মধ্যে হেনরি নিকোলসের উইকেটটা অসাধারণ ডেলিভারিতে হলেও ফিনের উইকেটাই তার চোখে সেরা, ‘আমার কাছে ফিন অ্যালেনের উইকেটটা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। গ্র্যান্ডহোমকে তো, আমি আজ নিয়ে তিনবার আউট করলাম। ও রিভার্স সুইপ করতে চাচ্ছিল, আমি ওই ডেলিভারিটা খুব জোরে বল করেছি আর ও মিস টাইম করেছে।’
ফিন অ্যালেন ও নাসুমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল একই সঙ্গে হ্যামিল্টনে। সেই ম্যাচে ফিনকে রানের খাতা খুলতে না দিয়ে নাসুম বোল্ড করেছিলেন। আজ বাঁহাতি স্পিনার আবারও পেলেন তার উইকেট। নিউ জিল্যান্ডকে কতটা ভুগিয়েছেন তিনি তা বোঝা যায় পরিসংখ্যানে। তার বোলিংয়ের ২৪ বলে ১৭টিতে কোনো রান নিতে পারেনি কিউইরা। সঙ্গে জানিয়ে রাখা ভালো, ৪ ওভারে দুটিই ছিল মেডেন।
পাওয়ার প্লেতে ব্যাটসম্যানরা বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আগ্রাসন দেখান। বোলাররা স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকেন। তবে নাসুম নতুন বলে বোলিং করছেন নিয়মিত। অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ভীতিও উঠে গেছে তার মন থেকে, ‘এখন আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। পাওয়ার প্লেতে বল করে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ওই সময় বল দিয়ে আমাকে বলা হয় না যে তুমি আমাকে একটা উইকেট বের করে দাও বা এরকম। জাস্ট আমার মতো বোলিং করার জন্য বলা হয়।’
সাকিবের ছায়া হয়ে নাসুম দ্যুতি ছড়াচ্ছেন নিয়মিত। ১৩ ম্যাচে ৬.০৭ গড়ে ১৭ উইকেট পেয়েছেন। আজ নিয়ে দুইবার ম্যাচ জয়ের নায়কও তিনি। সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। নাসুম নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপ দলে থাকবেন। বড় মঞ্চে তার বড় পরীক্ষা হবে।