রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

জিতে যান সোহান দল জিতলেই

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১

দেখে কেও করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’ দুর্যোগের কালো মেঘ মানব জীবনের চিরন্তন সত্য নয়। মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সূর্যের মতোই তা সাময়িক। পূর্বদিগন্তে একটা সময় উদিত হয় সেই সাফল্যের সূর্য। পশ্চিমে হেলে পড়তেই আবার আঁধার নামে। আবার সেই আঁধারের বুকেই উদিত হয় অস্তমিত থাকা চাঁদ। যার অপরূপ সৌন্দর্য জীবন মাধুর্যময় করে তোলে।

কাজী নুরুল হাসান এমনই এক সূর্য ও চাঁদের দেখা পেয়েছেন। ২২ গজে তার ব্যাট সাফল্য সূর্য হয়ে এসেছে। তার ভাবনা ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি বাংলাদেশ দলে চাঁদের বৈভব নিয়ে এসেছে। অথচ অজানা কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল! জেদ, হার না মানা মনোবল ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভাবনা সোহানকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রেখেছিল।

অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষা ফুরায়। সোহান সুযোগ পান দলে। বাজিমাত করে জিম্বাবুয়ের পর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে উইকেটের পেছনে এবং সামনে নিজের সামর্থ্য দেখান। তাতে নিজের ওপর আস্থা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দায়িত্ববোধ। সঙ্গে সোহান পাল্টে ফেলেছেন নিজের মানসিকতাও, ‘দল হিসেবে আমরা দুইটি সিরিজে অসাধারণ খেলেছি। কেউ একা ম্যাচ জেতায়নি। আমরা দল হিসেবে খেলে প্রত্যেকে ছোট বড় অবদান রেখেছি। দুই সিরিজে একটা জিনিস বুঝেছি, ব্যক্তি সোহান কেউ নয়। বাংলাদেশ দল মানেই আমরা সবাই।’

তবে ফেলে আসা কষ্টের দিনগুলির কথা ভোলেননি সোহান,‘আমি চাই না আমার পরিশ্রমের সময়টাকে ভুলে যাই। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই আমি হতাশ ছিলাম। কিন্তু কখনো চিন্তা করিনি যে আমি আর ফিরতে পারবো না। অনেককেই দেখেছি একবার বেরিয়ে গেলে আর ফিরতে পারেন না। আমি দুশ্চিন্তা না করে ভালো চিন্তা করেছি। সাকিব ভাই সাহস দিয়েছেন। প্রায়ই তিনি বলেন, ‘‘হচ্ছে না, হবে না, পারবো না এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’’ আমি নিজের পরিশ্রম ঠিকঠাক করে গিয়েছি। ফিটনেস ঠিক করেছি। ব্যাটিংয়ে উন্নতি করেছি। ফিল্ডিংয়ে বাড়তি মনোযোগী হয়েছি। সব কিছু মিলিয়ে আমি এক নতুন আমি হয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা আমার ভাবনার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।’

কেমন? জানাতে গিয়ে সোহান বলেন,‘নতুন একজন খেলোয়াড়ের মাথায় একটা বিষয় কাজ করে, আমাকে নিজেকে মেলে ধরতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে যাই করি না কেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে মেলে ধরতে হবে। আমি সেই দলের-ই ছিলাম। সেজন্য হয়তো শুরু থেকে সব পারফেক্ট হয়নি। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পেরেছি সাফল্য মানে একটাই কথা, সেটা দলের সাফল্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজটা আমাদের দলীয় প্রচেষ্টার ফল। কেউ একা এখানে অভাবনীয় পারফরম্যান্স করে ম্যাচ জেতায়নি। দলগত সাফল্য আসায় আমরা পেরেছি।’

ফিনিশারের ভূমিকায় দলে সুযোগ পেয়েছেন সোহান। জিম্বাবুয়ের মাটিতে দুই ম্যাচে নিজের কাজটা করেছেন শতভাগ দিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে ছোট ছোট ইনিংসগুলি রেখেছে বিরাট অবদান। তাতে সোহানের আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। এজন্য শেষ দিকে তার কাছে ১৫-২০ রানের অর্থ বিরাট কিছু,‘আমার কাজটাই ফিনিশ করা। শেষে গিয়ে আমাকে দ্রুত রান তুলতে হবে। জিম্বাবুয়েকে দুটি ম্যাচে হেরেছিলাম। এখানে সুযোগ পেয়েছি। একটিতে কাজে লাগিয়েছি।বাকিগুলিও গড়পড়তা। আমার কাছে শেষ দিকে কয়েক বলে ১৫-২০ বা ৩০-৪০ রান বড় পার্থক্য করে দেয়। আমার কাজ সেটাই দেখার। এসব রান তখন সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরি থেকেও বড় হয়ে উঠে ।’

তার ভাবনা থমকে গেছে একটি জায়গাতে,‘আমার সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আমি কখনো চিন্তা করতে চাই না। কিন্তু আমার কারণে দল যেন না ভোগে সেই নিশ্চয়তা আমাকেই দলকে দিতে হবে। এখন ভাবনা, কঠোর পরিশ্রম ও নিজের প্রক্রিয়াগুলি ঠিক রাখবো। বেশি চিন্তা করাও বাদ দিয়েছি এখন।’

উইকেটের পেছনে সোহানের নৈপুণ্য নিয়ে কোনোকালেই সংশয় ছিল না, দেশসেরা উইকেটরক্ষক তিনি। তবে ব্যাটিংয়ে নির্ভরতার ঘাটতি ছিল। পর পর দুটি সিরিজে সেই ঘাটতি থেকে বেরিয়ে আসার আশ্বাস অন্তত দিয়েছেন সোহান। সামনে কি হবে সেটা নিয়েও উদগ্রীব নন তিনি,‘লিটন ও মুশফিক ভাই ফিরলে কি হবে সেটা নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি অনেক বছর পর জাতীয় দলে ফিরে নিজেকে মেলে ধরেছি। আমার সামান্য অবদানে তিনটি সিরিজ জিতেছি।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.