গোয়াইনঘাটে দুই সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুনের মামলায় গ্রেপ্তার স্বামী হিফজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। এর একদিন পর রোববার (২০ জুন) দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাকে গোয়াইনঘাট আমলী আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে হাজিরের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ সাতদিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শনিবার (১৯ জুন) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই হিফজুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেবে পুলিশ।
গত বুধবার (১৬ জুন) সকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রামে নিজ ঘর থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩০), ছেলে মিজান (০৮) ও মেয়ে আনিসার (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ সময় সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হিফজুরকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার দিন থেকে পুলিশ পারিবারিক কলহ এবং জমি নিয়ে বিরোধ- এই দুই ক্লু নিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
তবে হিফজুরের আচরণের কারণে শুরু থেকে তাকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছিল পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার রাতে ওই ঘরে আর কেউ প্রবেশ করেনি। দরজা ভাঙার আলামতও নেই। আর এদিন সকালে হিফজুর তিনজনকে ফোন দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুইজনকে তিনি (হিফজুর) অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলেন।
তখন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ঘটনাস্থলের ছবি থেকে দেখা গেছে হিফজুর তার স্ত্রী ও সন্তানদের ওপরে শুয়ে আছে। তবে তার পায়ে মাটি লাগানো রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানদের পা পরিষ্কার ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর বেশ কিছুক্ষণ হিফজুর ঘরে হাঁটাহাঁটি করেছিল। এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই তাকে এ ঘটনার জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে, নিহত আলেমা বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানান পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের চিকিৎসকরা তাদের জানান আলেমা ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আঘাতের কারণে তার গর্ভের বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। আপাতত এটাকে ট্রিপল মার্ডার ধরা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনে এটাকেও মামলায় সংযোজনের কথা জানান তিনি।