রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তানে মদের বাজার চড়া করোনাকালে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১

মদ কেনা নিষিদ্ধ হলেও করোনাকালে মানুষের মধ্যে মদ কেনার প্রবণতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মদের দাম। করোনাকালে মদের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। আইনি বা কালোবাজারে মদের জোগান কম- এ জন্য দাম বেড়েছে বেশি।

পাকিস্তান মদ পান নিষেধ থাকলেও বিষয়টি সকলে মানেন না। যাদের কাছে অর্থ আছে, তারা চড়া দামে কালোবাজার থেকে মদ কেনেন। যাদের আয় কম, তারা কম দামের মদ কেনার দিকে ঝোঁকেন।

পাকিস্তানে ১৯৭৭ থেকে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রিত। তখন জুলফিকার আলি ভুট্টোর সরকার মদ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করে। শুধু কিছু বার ও ক্লাবে মদ পাওয়া যেত। পরে ১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনে ঘোষণা করা হয়, মদ খাওয়া ইসলামবিরোধী। মুসলিমদের কাছে মদ বিক্রি করা হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেন তিনি। তবে কিছু অঞ্চলে অমুসলিমদের জন্য মদের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রচুর কর দিয়ে কয়েকটি অঞ্চলে অমুসলিমরা এই দোকান চালাতে পারে।

পাকিস্তানের মদের দোকান
পাকিস্তানের সব চেয়ে জনবহুল শহর হলো করাচি। সেখানে একটি মদের দোকানে কাজ করেন হিন্দু যুবক রাহুল। সেখানে যারা মুসলিম নন, তাদের কাছে মদ বিক্রি করা যেতে পারে। তবে রাহুল জানিয়েছেন, তাকে অর্থ দিলেই তিনি মদ দেন।

রাহুল ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টানদের অনেকেই মদ খান। কার ধর্ম কি তা দেখা আমার কাজ নয়। তবে আমাকে সতর্ক থাকতে হয়’। তার মতে, ‘এই ব্যবসায় সতর্ক না হলে যে কেউ বিপদে ফেলে দিতে পারে’।

রাহুল জানিয়েছেন, তিনি মদ বিক্রি করে মাসে ২৫ হাজার টাকার মতো রোজগার করেন। বড়লোক ক্রেতারা তাকে টিপসও দেন। আগে তিনি তুলা-শ্রমিক ছিলেন। তার থেকে এখন অনেক বেশি রোজগার করছেন।

করাচিতে রাহুলের মদের দোকান হলো অদ্বিতীয়। বাকি পাকিস্তানে এমন দোকান দেখতে পাওয়া যায় না। মুসলিম ক্রেতারা কালোবাজার থেকেই মদ কেনেন। অনুমোদিত মদের দোকানে তা-ও দাম নিয়ন্ত্রিত থাকে। বাকি পাকিস্তানে কালোবাজারে করোনার সময় মদের দাম অনেক বেড়ে গেছে।

বেশি দাম দিয়ে মদ কিনতে হচ্ছে
ওমর হলেন পাকিস্তানের ৩৭ বছর বয়সী গায়ক। তিনি জানিয়েছেন, মদের দাম বেড়ে গেলেও আরো বেশি মানুষ তা কিনে খাচ্ছেন। ডয়েচে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ‘গত বছর পর্যন্ত আমি অন্যদের সঙ্গে বসে মদ খেতাম। এখন রোজ একা খাই’। তবে তিনি জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তানে যারা মদ খান, সামাজিক কারণে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ করেন’।

ওমর জানিয়েছেন, ২০২০ সালের লকডাউনের পর থেকে বিয়ার এবং মদের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছিল। এখন তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। আগে স্থানীয় ভদকার বোতল পাওয়া যেত সাত শ টাকায়। এখন তা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৬৫০ টাকা।

৩৮ বছর বয়সী সাংবাদিক হীরা বলেছেন, তিনি এক বোতল ব্ল্যাক লেভেল কিনেছিলেন ছয় হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু তাতে পানি মেশানো হয়েছে। অন্য অনেকের অভিজ্ঞতা একই। এখন তিনি স্থানীয় কম্পানির বিয়ার কিনছেন। হীরা বলেছেন, এত টাকা খরচ করে বিদেশি ব্র্যান্ড কিনে যদি এই অবস্থা হয় তো না কেনাই ভালো।

কী বলছে কম্পানি
মুরি ব্রুয়ারির সিইও ইসফানিয়ার ভান্ডারা ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘গত বছর মার্চ ও এপ্রিল তাদের উৎপাদন বন্ধ ছিল। গমের মতো বেশ কিছু জিনিস নষ্ট হয়েছে। করোনার জন্য লাভ ৫০ শতাংশ কমেছে। তবে অনেক সংস্থা তো করোনার সময় বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের থেকে আমাদের অবস্থা ভালো। তবে ২০২১ থেকে বিক্রি বাড়ছে’। ভান্ডারা জানিয়েছেন,  তাদের সংস্থা ১৮৬০ সালে তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশদের চাহিদা মেটাতে। এটা পাকিস্তানের সব চেয়ে পুরনো সংস্থা এবং সর্ববৃহৎ মদ প্রস্তুতকারক।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.