শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

স্বপ্নভঙ্গ কৃষকের, বারহাট্টায় শিলা ঝড়

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১

মৌসুমে বোর ফসলের বাম্পার ফলন হওয়ায় রঙিন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার কৃষককূল। আচমকা শিলা-ঝড়ের তাণ্ডবে তাদের সেই স্বপ্ন মুছে গেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে এই শিলা-ঝড় বয়ে যায়। গত রবিবার রাতের গরম হাওয়ায় প্রায় ৩ হাজার একর জমির বোর ফসলের ক্ষতি হয়। সর্বশেষ শিলা ঝড়ের কারণে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ শতগুণ বেড়ে গেছে। উপজেলার সিংধা, আসমা ও চিরাম ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই প্রতিনিধি শুক্রবার শিলা-ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় আসমা ইউনিয়নের গাভারকান্দা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৪৩) ও চিরাম ইউনিয়নের নৈহাটী গ্রামের ডালিম মিয়া (২৭) বলেন, ছয়হাল, গুড়ল, বাহিরকান্দা, উজানগাঁও, গাভারকান্দা, বাহিরকান্দা, নৈহাটী, নিজ-চিরাম, বাদে-চিরাম, ভাটী-নোওয়াপাড়া, চিরাম, পুটিদানা, বালাম, পুটকিয়া, হরিরামপুর, খাশিকোনা, বাহাদুরপুর প্রভৃতি গ্রামের হাজার হাজার পরিবারের জীবিকার একমাত্র উৎস্য বোর ফসল। তাদের জমাজমি এলাকার জলদীঘা, সিংগুয়া, চেংজান, গুংগিয়াজুরি, কালাবাগুয়া, আশিয়ল প্রভৃতি বিল ও হাওরে অবস্থিত। সকলের জমিতেই ভালো ফসল হয়েছিল। বৃহস্পতিারের শিলা ঝড়ে সব শেষ হয়ে গেছে।

নৈহাটী গ্রামের আতিক মিয়ার স্ত্রী সাজেদা (৪৮) বলেন, আমি দারদেনা কইর‌্যা অন্যের ১৫-২০ কাঠা জমি চাষ করছিলাম। শিলে সব শেষ।

নিজ-চিরাম গ্রামের রুনা বলেন, আমি ১০ কাঠা জমি গিরবি (বন্ধক) রাইখ্যা কামলা দিয়া চাষ করাইছিলাম। অহন ক্ষেতে কাছি যাইব না। নিজ-চিরাম গ্রামের মহরম আলীর স্ত্রী নূরেজা (৪৫) দুই নাতি সাথে নিয়া চেংজান হাওরে নিজের ক্ষেতের কাছে এসে কেঁদে ফেলেন।

তিনি বলেন, আমরার মাত্র ১৪ কাঠা জমি। শিলে সব শেষ কইর‌্যা দিছে। নাতিরারে লইয়া খাইয়াম কি জানি না। একই গ্রামের কুতুব উদ্দিন (৫০) বলেন, আমি ২২ কাঠা জমিতে ২৮ করছিলাম। পাইক্যা গেছিন। ইচ্ছা আছিন আগামী মঙ্গলবার কাটবাম। গত রাতের শিলে সব শেষ কইর‌্যা দিছে।

বাখরা গ্রামের সোহেল মিয়া, নৈহাটী গ্রামের জাহঙ্গীর (৩২), আলামীন (৩২), নিজ-চিরাম গ্রামের মো. কবির, সকলেরই এক কথা। দুই-একদিনের মধ্যে ২৮জাতের ধান কাটার পরিকল্পনা ছিল তাদের। শিলার আঘাতে ক্ষেতের পাকা ধান মাটিতে পড়ে গেছে। কাঁচা ধানের শীষ ভেঙে নুয়ে পড়েছে। হাজার হাজার একর জমির ধান কাটার সুযোগ রইল না।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মোরশেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমিনুর রশিদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্শন করেছেন।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপজেলার চিরাম আসমা ও সিংধা ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ও হাওরের সাড়ে তিন হাজার একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এবার উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার একর জমিতে বোর চাষ হয়েছে।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.