প্রত্যাশিত ও কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অহংকার! আমরা প্রবাসী কর্মীরা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেছি। আমাদের জন্য বাংলাদেশে নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু তৈরি হয়েছে। পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয়, দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের একটি আবেগ অনুভূতির নাম।
আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার পদ্মা সেতু। এটি বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতির জন্য অনেক বড় সাফল্য। নিজ দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী, বিরোধী দল এবং অনেক মোড়ল দেশ চায়নি যে পদ্মা সেতু হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অদম্য মনোবলের কারনে এবং বাংলার সকল শ্রেণির মানুষের বিশ্বাসকে শক্তি হিসেবে নিয়ে আজ এটি সাফল্যের দোরগোড়ায়। পরবর্তী ছুটিতে গেলেই এর উপর দিয়ে পদ্মা নদী পার হতে পারব। এ যে কী অনুভূতির, কী আনন্দের তা প্রকাশ করতে পারছি না।
সত্যিই খুব আনন্দময় অনুভূতি! বাঙালি জাতির গর্ব বহুদিনের প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু ২৫ জুন শুভ উদ্বোধন হলো। সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থে এ সেতু নির্মিত হলেও এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেক অবদান রয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের স্বনির্ভরতা ও সক্ষমতার প্রতিক হয়ে প্রমত্তা পদ্মা বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকবে। এই সেতু যেমন আমাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করবে।
পিনাক-৬ নামক লঞ্চডুবির কথা আমরা অনেকেই ভুলে গেছি, কিন্তু ওই এলাকার মানুষ কখনই ভুলবে না সেই ভয়াবহ লঞ্চডুবির কথা। এখনও লঞ্চ পারাপারের সময় অনেকেই পিনাক-৬ এর কথা স্বরণ করেন দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ৪ঠা আগষ্ট সেদিন ঈদের ছুটি কাটিয়ে শিকদার মেডিকেলের ছাত্রী নুসরাত জাহান হীরা ঢাকায় ফিরছিলেন। তার সেলফির সাথে ফেসবুক স্ট্যাটাস ছিল- গুড বাই শিবচর। হীরা সেদিন শুধু শিবচরকেই গুডবাই জানায়নি, গুডবাই জানিয়েছিলেন এই পৃথিবীটাকেই। সেদিন মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পদ্মার তীব্র স্রোতে ভেসে গিয়েছিল অধিকাংশ মানুষ। এভাবে কত প্রান যে ঝরে গেছে এই পদ্মার বুকে তাদের খবর কয়জনই বা রাখে? এই সেতু নির্মাণের পেছনে রয়েছে বহু চ্যালেঞ্জ আর বাধা-বিপত্তির গল্প। কত জটিলতা সংশয় সন্দেহের পর প্রমত্তা পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
যারা এর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন তাদের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ এবং আহবান- একবার বাংলার গৌরব স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখে আসুন।