শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ন

আম উৎপাদনে চরম বিপর্যয়ের শঙ্কা চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাপদাহে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১

আমের কি হবে? এমন শঙ্কা নিয়েই চলছে আম বাগান মালিক ও উৎপাদনকারীদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। গত বছর করোনার কারণে আম নিয়ে বেশী ভাবিয়ে তুলেছিল আম বাগান মালিক ও উৎপাদনকারীদের। তবে গত বছর আম কম উৎপাদন হওয়ায় বাজারজাত করতে তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। কয়েক জাতের আমের দাম ভালো পেলেও অতি বর্ষায় ফজলি ও আশ্বিনা আম বেশীর ভাগই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যা হবার তাই ঘটেছিল ভাগ্যহীন আমচাষিদের কপালে।

এবার যে আমের কি হবে? পেছনে ৬/৭ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও প্রশ্ন বরাবরই থাকে। যেমন মিজ পোকার আক্রমণ, কুয়াশার কারণে হপারের আক্রমণ, তাপদাহ, ঝড়, শিলাবৃষ্টি, অসময়ে অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, অতিবর্ষা, কয়েক বছর আগে মিথ্যা কলঙ্ক দিয়ে আমে ফরমালিন মেশানোর মিথ্যা অভিযোগে শতাধিক ট্রাকের আম সড়কে প্রশাসন ফেলে দেওয়া ও বিভিন্ন কারণে বাজারে দাম কম।

এবার গাছে গাছে ৯৫ ভাগ মুকুল দেখে আশায় বুক বাধা ও চোখে-মুখে আশার ঝিলিক জাগে আম চাষিদের। কিন্তু তিন সপ্তাহ আগে তিন-চারদিন আকাশ মেঘলা থাকায় রস শুকাতে না পারায় ছত্রাক বাসা বাঁধে ও পরে রোদে ৫০ ভাগ মুকুল শুকিয়ে ঝরতে শুরু হয়।
কৃষি বিভাগ এবার বাম্পার ফলনের কথা বললেও আম চাষি ও বাগান মালিকদের কেউই আমের বাম্পার ফলন নিয়ে এ মতের সাথে ৫০ ভাগও মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।

এবার যে আমের কি হবের পেছনে ৬/৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে ও মাঝারী তাপদাহের কারণে আম পরিমাণ মতো উৎপাদন হবে কি না কয়েকদিন যাবত এমন চরম ভয় ও শঙ্কায় শঙ্কিত আম চাষি ও বাগান মালিকরা। বাগানে বাগানে রাত-দিন চলছে সেচ প্রদান আম ঝরে পড়া থেকে রার জন্য। এতে করে বাড়ছে উৎপাদন খরচও। অনেকেই পুঁজির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না, অনেকেই তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে বৃষ্টির আশায়। স্যালো মেশিনে সেচ দিতে গিয়ে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় দুই থেকে তিনগুণ সময় বেশী লাগছে সেচ দিতে। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহের কারণে ঝরে পড়ছে কচি কচি আম।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর আম বাগানে এবার আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা রয়েছে আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, যে ক্ষতির কথা বলছে আম উৎপাদনে সংশ্লিষ্টরা তাতে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটা নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। প্রবাদ আছে আমের আনা, মাছের পাই, টিকলে পরে কে কত খায়। যে মুকুল এসেছিল এবং দানা বাধে তাতে ১ ভাগ টিকলেও শতভাগ উৎপাদনের লক্ষমাত্রায় পৌঁছে যাবে এবার।

আমচাষি আকতারুল ইসলাম, কাইয়ুম আলীসহ অনেকেই জানান, এবার আশা করেছিলাম গত কয়েক বছরের চেয়ে অনেক বেশী উৎপাদন হবে। কিন্তু প্রায় তিন সপ্তাহ আগে কুয়াশা ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে ৫০ ভাগ মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। দশ-বারো দিন থেকে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে।

আম চাষী সেলিম জানান, বাগানে বাগানে স্যালো মেশিন দিয়ে চলছে সেচ প্রদান। পানির স্তরও নিচে নেমে যাওয়ায় পানিও উঠছে না ঠিকমতো।

বাগান মালিক জামাল হোসেন পলাশ, ইব্রাহিম আলী, স্বাধীন ও আব্দুল লতিফ জানান, আম বাগান মালিক ও উৎপাদনকারীদের আম উৎপাদনে বিনামূল্যে সার প্রদান ও সেচ প্রদানে প্রণোদনা দেওয়া উচিত। আর তাহলে উৎপাদনে খরচ কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে।

উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম আরো জানান, গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে টানা এক সপ্তাহ অনেক বৃষ্টিপাত হলেও এরপর আজ পর্যন্ত আর কোনো বৃষ্টির দেখা নেই।

কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আরো জানান, গত মাঘ মাস থেকে কৃষি বিভাগ বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ দিতে মাঠে কাজ করছেন।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.