বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, তেল বিপণন কোম্পানি প্রায় চার হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। কারণ সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশ কম ছিল। গত ৭ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকার পরও দেশে দাম না কমিয়ে সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। সেই মুনাফার টাকা কোথায়। সেই মুনাফার একটা অংশ এখন ভর্তুকি হিসেবে দিলেও দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না।
রবিবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন জনতার মঞ্চ “জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সরকারী সিদ্ধান্ত ডিজেল ও কেরোসিন, এলপিজির মূল্যবৃদ্ধির” প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তেল পাচার হয়ে যাওয়া অজুহাত মাত্র। মনে রাখতে হবে তেল পকেটে করে পাচার করা যায় না। আর তেল পাচার জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেওয়া পুলিশ, বিজিবি কেন পাচার রোধ করতে পারে না? বাজারে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির সময়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আগুনে ঘি ঢালার শামিল। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি মানুষের ওপর নতুন নিপীড়ন এবং তা অত্যাচারের শামিল।
তিনি বলেন, সরকার সম্প্রীতি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণের জীবনযাত্রাকে সীমাহীন সংকটের মুখে ফেলেছে। বৈশ্বিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দিয়ে পরিবহন ও শিল্পখাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোলিয়াম পণ্য ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এরই মধ্যে বিপুল জনগোষ্ঠী কর্মসংস্থান হারিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে গেছে। এ অবস্থায় নতুন করে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হলে জনগণের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এটা গ্রামীণ কৃষিনির্ভর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সীমিত আয়ের শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও লুটপাটে নিমজ্জিত সরকার এ লভ্যাংশ কোনো জনবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যয় করছে না। বরং মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ নামে লুটপাটের মহোৎসবে নিয়োজিত করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম না কমিয়ে আগে থেকেই সরকার জনগণের ওপর জুলুম করেছে। এখন নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির অপকৌশল গ্রহণ করছে, যা জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
মুহম্মদ আতাউল্লাহ খান বলেন, এমনিতেই চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। এমতাবস্থায় ডিজেল-কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ১২ কেজি এলপিজির দাম মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে বাড়ানো হয়েছে ৫৪ টাকা। এটা মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে জনগণের জীবন যাত্রাকে আরো বিপন্ন করে তুলবে।
মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে মূল্য সমন্বয়ের নামে ডিজেল-কেরোসিন ও এলপিজি’র দাম বাড়ানোর কথা বলছে গণবিরোধী সরকার অথচ যখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমে তখন মূল্য সমন্বয় করে দাম কমানো হয় না। বরং সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মুনাফার নামে লুটপাটে ব্যাস্ত থাকেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডঃ শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ বলেন, তেলের দাম বাড়ার ফলে এখন বাসে ভাড়া বৃদ্ধি হবে, বর্তমানে বাজারে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এ বছরের করোনা মহামারিতে জনগণ কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে জীবনধারণ করছে। সরকার সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে আবারও কেরোসিন ও সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে।
মঞ্চের সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডঃ শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের মহাসচিব মুহম্মদ আতাউল্লাহ খান, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সচেতন জনতার মঞ্চের সদস্য সচিব ড. এ আর খান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, বিডিপি’র সভাপতি শামসুল আলম চৌধুরী সুরমা, সোনার বাংলা পার্টি পার্টি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, তৃণমুল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব কবি রোকসানা আমিন সুরমা, জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেহেনা আকতার রেনু, বাংলাদেশ ন্যাপ নেত্রী মিতা রহমান, জাস্টিস পার্টি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, ইসলামী ঐক্যজোট সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শওকত আমীন, কল্যাণ পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান এ এফ ওবায়দুল্লাহ মামুন, বিসিপি চেয়ারম্যান এম. এম. আনিছুর রহমান দেশ, স্বদেশী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভুইয়া, মানবাধিকার সংগঠক আমিছুর রহান রুবেল প্রমুখ।