১২ বলে ২৩ রান প্রয়োজন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমনটা অনেক ম্যাচেই ঘটে। টানটান উত্তেজনা থাকলেও এমন পরিস্থিতিতেও জয়-পরাজয়ের বিষয়টি অনিশ্চিত থাকে।
কারণ টি-টোয়েন্টিতে ৬ বলে ৩৬ রান হওয়া সম্ভব। সেখানে উইকেট হাতে থাকলে ১২ বলে ২৩ রান স্বাভাবিকই বটে। আইপিএল, বিপিএল, সিপিএলে এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বের করে আনতে দেখা যায় ব্যাটসম্যানকে।
শুক্রবার বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে শেষ দুই ওভারে ঠিক এই পরিস্থিতিই ছিল। এমন রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দিয়ে খেলাকে আরো বেশি রোমাঞ্চিত করলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
ঠিক যেন এমন, মোস্তাফিজ তোমার কাটারের ভেলকি দেখাও। ডেথ ওভারের কারিশমা দেখাও। এই ওভারেই লুকিয়ে আছে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারানোর বিষয়টি।
আর মোস্তাফিজ যেন অধিনায়কের হৃদয়ের সেই বার্তা টেলিপ্যাথিক উপায়ে ঠিকঠাক পেয়ে গেলেন।
দলের রান যখন ১২৮, উইকেটে ছিলেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান এবং অ্যালেক্স ক্যারে। দুজনার মধ্যে ক্রিশ্চিয়ান মারকুটে ও এসব পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবে সামাল দেয়ার দারুণ দক্ষতা রয়েছে তার।
মোস্তাফিজের ৬টি ডেলিভারিতে দুটি শটই যথেষ্ট তার কাছে। কিন্তু মোস্তাফিজ ঠিকই জানিয়ে দিলেন স্লগ ওভারে খুবই ভয়ঙ্কর এক বোলার তিনি।
দুটি শটে ছয় ছয় করে ১২ তো দেওয়া দূরের কথা মোস্তাফিজ এতোই কৃপণতা করলেন যে, দিলেন মাত্র ১ রান!
অস্ট্রেলীয় সমর্থকরা তো বটেই বাংলাদেশি সমর্থকরাও বলবেন, এতোটা কৃপণ হলে কী চলে!
মূলত মোস্তাফিজের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারটিই ম্যাচের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দিয়েছে।
কাটার মাস্টারের ওভারের দ্বিতীয় বলে অ্যালেক্স ক্যারে ১টি রান নিয়েছিলেন। পরের চার বল ড্যান ক্রিশ্চিয়ান শুধু বল ঠেকিয়েই গেলেন। রান নিতে পারলেন না।
চার ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ। বিশ্লেষকদের মতে, আজ মোস্তাফিজকে কোনো উইকেট দেব না অসিদের এমন পরিকল্পনাই ডুবিয়েছে। নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছেন। উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে গিয়ে ১৫টি ডট দিয়েছেন মোস্তাফিজকে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এ কী ভাবা যায়!
মোস্তাফিজ মাত্র ১ রান দেওয়ায় শেষ ওভারটি অনেকটা নির্ভার হয়ে বল করেছেন শেখ মাহদি। প্রথম বলে ছক্কা খেয়েও বিচলিত হননি। শেষ ৫ বলে নিজের জাত চিনিয়ে জয়টা তুলে নিলেন মাহদি।