বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ এবং কিশোরী ও তার মাকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার দুদকের মামলায় হাইকোর্টের পর আপিল বিভাগও জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে তুফান সরকারের করা আবেদন খারিজ করে বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চ্যুয়াল আপিল বেঞ্চ আদেশ দেন।
গত ১লা এপ্রিল হাইকোর্ট তুফান সরকার ৬ মাস কোনো আদালতে জামিন আবেদন করতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে এ মামলায় তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতে তুফান সরকারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শরীফ উদ্দিন চাকলাদার। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। আসামি তুফান সরকারের আয়ের কোনো উৎস ছিল না। তিনি আয়কর রিটার্নে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ টাকা দেখান। দুদকের নোটিশে সম্পদের সঠিক হিসাব দেননি তিনি। এ কারণে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানার মামলা করেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়ার এক কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান সরকার। পরে তার শ্যালিকা পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকির বাসায় নিয়ে গিয়ে মা ও মেয়েকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় দু’টি মামলা করেন ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার মেয়েটির মা।
ওই মামলায় পুলিশ প্রধান আসামি তুফান সরকার, তার স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালিকা পৌর কাউন্সিলর, নাপিতসহ বেশ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তদন্ত শেষে ধর্ষণ মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১০ জনকে এবং মাথা ন্যাড়া করার মামলায় দণ্ডবিধিতে ১৩ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২৯ জুলাই থেকে কারাগারে আছেন তুফান সরকার।