সাত বছর আগে চাপাতি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় আবদুর রহমান চঞ্চল নামের ওই ছাত্রকে। ২০১৫ সালের ১৪ই মে’র ওই ঘটনার বিচার হয়নি এখনও। তখন মামলা হলেও, প্রভাবের কারণে এমপি আউয়ালকে আসামি করতে পারেনি তার পরিবার। এখন শাহীন উদ্দীন হত্যায় সাবেক এমপি আউয়াল গ্রেপ্তার হওয়ার পর চঞ্চল হত্যার বিচার পাওয়ার আশা দেখছে তারা।
২০১৫ সালের ১৪ই মে। পল্লবীর বুড়িরটেকের সিরামিক এলাকায় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় স্থানীয় বঙ্গবন্ধু কলেজের ছাত্র আবদুর রহমান চঞ্চলকে।
চঞ্চলের পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে সাবেক এমপি আউয়ালের বাহিনী। সম্প্রতি কুপিয়ে হত্যা করা শাহীন উদ্দীনের চাচাতো ভাই মো: সোলায়মান মনে করে হত্যা করা হয় নিরপরাধ চঞ্চলকে। ডিবিসি নিউজের মুখোমুখি হয়েছেন, ভাগ্যক্রমে বেচে যাওয়া সেই সোলায়মান।
শাহীন উদ্দীনের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ সোলায়মান জানান,’তারা রামদা নিয়ে এসে সিরামিকের গেট দিয়ে ভেতরে এসে চঞ্চল নামের ছেলেটারে কুপায়, তখন তারা বলতে থাকে এ শাহীন উদ্দীনের চাচাতো ভাই। এরে মার। ওর চুলটা কোঁকড়া ছিলো, আমাকে মনে করে তাকে মেরে ফেলে।’
নিহত চঞ্চল এর মা সালমা বেগম। ৭ বছর ধরে ছেলে হারানোর শোক আর ক্ষোভ বুকে তার। এখনো তার প্রশ্ন কি দোষ ছিল তার ছেলের।
নিহত চঞ্চলের মা সালমা বেগম বলেন,’কি অন্যায় করেছে আমার ছেলে। সে কলেজের ছাত্র ছিলো। আমি বিচার চাই।’
ঘটনার পর পরিবারের মামলায় চার্জশিট হলেও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া মূল দুই খুনি এখনো গ্রেপ্তার না হওয়া হতাশ স্বজনেরা। নিহত চঞ্চলের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন,’মামলার তদন্ত হবার পর কয়েক জনকে ধরলো। মূল যে আসামি খলিল, বিল্লাল ওদেরকে তো ধরেনি। ওরা ধরা না পড়লে তো আমরা বিচার পাবো না।’
২০১৫ সালের ওই হামলার কারণও ছিল জমি দখল করতে না পারা। সম্প্রতি খুন হওয়া শাহীন উদ্দীনদের জমি দখল করতে না পেরে হামলা চালাতে এসেছিল আউয়াল বাহিনী। তার প্রভাবের কারণে আউয়ালের বিরুদ্ধে বিচার চাইতে পারেনি চঞ্চলের পরিবার। এবার আউয়ালের বিচার চান তারা।
নিহত চঞ্চলের বাবা মো: হারিস মিয়া বলেন,’আমরা কেস করার পর আমাদেরকে হুমকি দেয়। আমাদেরকে একদিন মারার জন্য আটকে ছিলো। আওয়ালের নির্দেশে হয় এগুলো।’
নিহত চঞ্চলের মা সালমা বেগমের দাবি,’আমার ছেলেকে যারা বিনা দোষে কুপায় মারছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
আলোচিত শাহীন উদ্দীন হত্যা মামলার তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা বলছে, চঞ্চল হত্যায় সাবেক এমপি আউয়ালের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হবে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ বলেন,’হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, এর সঙ্গে আরও কিছু জড়িত কিনা সেগুলো ডিবিতে তদন্ত করে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব।’
এলাকাবাসী বলছেন, চঞ্চল হত্যার পর নাটের গুরু সাবেক এমপি আউয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পরে শাহীন উদ্দীনকে এভাবে খুন হতে হতো না।