সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই দেশজুড়ে তোলপাড়।
পুলিশ জানায়, ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ অভিযোগে মামলা হলেও এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মামলা হয়েছে দণ্ডবিধি ৩০৬ ধারায়। আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’ ও ‘অভিপ্রায়’ এখন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য সাক্ষ্য সংগ্রহ জরুরি। পুলিশ এই ঘটনায় যাবতীয় তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। বেশ কিছু ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ঘটনাটিকে এক সুতোয় গাঁথতে, অর্থাৎ কোন ঘটনার পর কোনটি ঘটেছে, তা জানতে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, মুঠোফোন ও পারিপার্শ্বিক যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলো সংগ্রহ করেছে। ভুক্তভোগী নারীর মৃত্যু কী কারণে, সেটি জানা সবচেয়ে জরুরি।
মুনিয়ার লেখা ছয়টি ডায়েরিও হাতে পেয়েছে পুলিশ। যাতে আনভীরের সঙ্গে সম্পর্ক, মনোমালিন্য, জীবন সম্পর্কে হতাশার কথা উল্লেখ রয়েছে।
সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, মোসারাত জাহানের (মুনিয়া) নিজ হাতে লেখা ছয়টি ডায়েরি আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য। ডায়েরিতে সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতি, জীবন নিয়ে তার প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা, তাদের সম্পর্কের টানাপোড়ন ও পারিবারিক সমস্যার কথা লিখে গেছে সে। পুলিশ ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার দেয়ার চেষ্টা করছে। মামলাটিকে আদালতে প্রতিষ্ঠিত করতে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহকে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানায়, পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পেলেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে। এখন আমাদের মূল কাজ হচ্ছে মামলা সংক্রান্ত যে অভিযোগ সেগুলোর পর্যাপ্ত সাক্ষ্য এবং প্রমাণাদি সংগ্রহ করা।
অভিযুক্ত আনভীরের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার খবর নাকচ করে দিয়েছে পুলিশ। তিনি জানান, আমরা ইমিগ্রেশন পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি তারা আমাদের নিশ্চিত করেছে যে পাসপোর্ট তার নামে করা আছে সেই পাসপোর্টযোগে কেউ বাইরে যান নি। বিদেশে থেকে জামিন আবেদন করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের আগাম জামিন বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি হবে আজ।