প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত বেসরকারি একটি ব্যাংকের নৈশপ্রহরীর মৃত্যু হয়েছে। সুমন খান নামে এই ব্যক্তিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষরা। গত সোমবারের এই ঘটনার চার দিন পর শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
স্বজনদের অভিযোগ, এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদকসেবীদের হামলায় সুমন খানের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এদিকে, মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ।
অন্যদিকে, সুমন খানের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছালে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধা সরকারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
চাঁদপুর সদরের রঘুনাথপুর গ্রাম। গত ৫ মার্চ রাতে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন এই গ্রামের বাসিন্দা সুমন খান (৩৬)। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই একদল সন্ত্রাসী তার ওপর হামলা করে। এসময় দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী নাজমুল গাজী ও তার দল সুমন খানকে বেদম পেটাতে থাকে। তার ডাকচিৎকারে ছুটে আসেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পরে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আহত সুমন খানকে প্রথমে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি ঘটতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গত শুক্রবার মারা যান তিনি। পরে গ্রামের বাড়িতে নিহতের লাশ নিয়ে আসা হয়। নিহতের স্ত্রী রুনা আক্তার বলেন, চোখের সামনেই নাজমুল গাজী ও তার সাঙ্গপাঙ্গ তার স্বামীকে পিটিয়ে আধমরা করে ফেলে চলে যায়।
সন্তানকে হারিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধা মা ফিরোজা বেগমের বোবা কান্নায় আশেপাশের পরিবেশও ভারি হয়ে উঠে। এসময় এই মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেন উপস্থিত অনেকে। শুধু তাই নয়, পরিবারের আয়ের মানুষটির এমন পরিণতিতে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। নিহতের ভাই রেজা খানের অভিযোগ, তার ভাইকে চাঁদার দাবিতে প্রতিপক্ষরা হত্যা করেছে। তাই এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে, এলাকাবাসীরও অভিযোগ মূলত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা চাঁদা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে সুমন খানকে হত্যা করেছে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, অন্যদিকে, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রেক্ষিতে ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একই সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, পুলিশ ঘটনার নেপথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। এতে প্রকৃত অপরাধীদের আটক করা সহজ হবে।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, চাঁদপুর শাখার নৈশপ্রহরী ছিলেন নিহত সুমন খান।