বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ডের জন্য ডিপো মালিক ও সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোকে দায়ী করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটি। আজ বুধবার বিকেলে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ডিপো মালিক ও সরকারি তদারকি সংস্থাগুলো এর দায় এড়াতে পারে না। ’
তদন্ত কমিটি গঠনের এক মাস এক দিন পর আজ বুধবার বিকেলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা এ প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘৪ জুন দুর্ঘটনার পরদিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেব। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। ’
কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার কারণ, দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এ থেকে উত্তরণে সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করেছি। প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে গিয়েছি এবং কারা এর জন্য দায়ী তা নির্ধারণের চেষ্টা করেছি। এ তদন্তকে চূড়ান্ত বলা যাবে না। এ ঘটনায় বৃহত্তর তদন্তও হতে পারে। ’
তদন্তকালে ডিপোতে কর্মরত ও এলাকাবাসীসহ ২৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত নমুনা সিআইডি, পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। তদন্তকালে ডিপোর কোনো সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। যে কনটেইনারে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাখা ছিল তাতে ইউএন (জাতিসংঘ) সনদ ছিল না। ১৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ২৫৯টি সংযুক্তিপত্র সংযোজন করা হয়েছে। অগ্নি দুর্ঘটনার জন্য ডিপোতে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে দায়ী করা হয়েছে।
গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক। দুর্ঘটনার পর মোট ছয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক করা কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।