টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা নেই তামিম ইকবালের তিন বছর হয়েছে। ঘরের মাঠ বিবেচনা করলে এই সময়টা আরও বেশি- ৬ বছর! শেষ পর্যন্ত দুটি আক্ষেপই দূর হলো চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন দশম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন বামহাতি ওপেনার। আর একটি সেঞ্চুরি পেলেই দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১১ সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হককে স্পর্শ করবেন তিনি।
অবশ্য লাঞ্চ থেকে ফেরার পরই ওপেনিং সঙ্গী মাহমুদুল হাসানকে হারাতে হয়েছে তাকে। ৫৮ রান করা মাহমুদুল আসিথা ফার্নান্ডোর বলে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। তার ফেরার পর তামিম কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরিটি তুলে নেন। অবশ্য নতুন নামা নাজমুল হোসেন শান্তও বেশিক্ষণ তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। কনকাশন সাব হিসেবে নামা পেসার কাসুন রাজিথার বলে কিপারকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ২ রানে ফিরেছেন।
তার পর পর তামিমও আম্পায়ারের ভুলে ক্যাচ আউট হয়েছিলেন। বল ব্যাটে লেগে গ্লাভসে জমা পড়েছে ভেবে আউট দিলে বামহাতি ব্যাটার রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গে। সেখানে স্বস্তির খবরই পান তামিম। দেখা গেছে বল ব্যাটেই লাগেনি।
৫৬ ওভার শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৭৫ রান। তামিম ব্যাট করছেন ১০৩ রানে, নাজমুল হোসেন শান্ত ২ রানে। স্বাগতিকরা পিছিয়ে আছে ২১৮ রানে।
বামহাতি ওপেনারের সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি ছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি। হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৬ রান করেছিলেন। তার পর দুবার কাছে গেলেও সেসব ইনিংস সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি। ২০২১ সালে পাল্লেকেলেতে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯০ ও ৯২ রানের ইনিংস খেলেছেন। একটিতে অপরাজিত থেকেছেন ৭৪ রানে।
ঘরের মাঠে সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি ছিল ২০১৬ সালের অক্টোবরে। মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৪ রান করেন তিনি।
তামিমের আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। লাঞ্চ ব্রেকে যাওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ৪৭ ওভারে ১৫৭ রান। বিরতির পর মাহমুদুল হাসান জয়ের ফেরায় ভাঙে ১৬২ রানের মহাকাব্যিক জুটি।
অবশ্য টেস্টে বরাবর বাংলাদেশের আক্ষেপের নাম হয়ে থেকেছে এই ওপেনিং। থিতু হওয়ার পাশাপাশি বড় রান খুব একটা আসতে দেখা যায় না। সেখানে সুবাস ছড়িয়েছেন তামিম ইকবাল-মাহমুদুল হাসান। তাদের ছড়ি ঘোরানো ব্যাটিংয়েই ওপেনিংয়ে ৬১ ইনিংস পর দেখা মিলেছে শতরানের পার্টনারশিপ।
লঙ্কান বোলারদের দিনের শুরু থেকেই শাসন করেছেন দুই ওপেনার। তামিম দ্রুত ব্যাট চালিয়ে ফিফটি তুলে নিয়েছেন। দশম সেঞ্চুরি পেতে খেলেছেন ১৬২ বল। মাহমুদুল হাসানের তুলনায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে ৩৯৭ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর এক কথায় আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে দুই ওপেনার। রান রেট বিবেচনায় নিলে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার তুলনায় রান তোলার গতিও ছিল বেশি। তবে প্রথম সেশনের শেষ দিকে ৪৩.৪ ওভারে বিপদ ঘটতে পারতো তামিমের। প্রথম দিন তার ক্যাচ পড়ে যায় স্লিপে। এদিন রামেশ মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে বল এজ হলেও তা প্রথম স্লিপে যাওয়ার একটু আগে ড্রপ খেয়ে যায় মাটিতে।
মাহমুদুল হাসানও জীবন পেয়ে যান ৩৯তম ওভারে। হুক করতে গিয়ে বল বাতাসে তুলে দিয়েছিলেন।