এটাই বাস্তবতা। কিন্তু শেন ওয়ার্নের মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারেনি ক্রিকেবিশ্ব। গত সন্ধ্যার সেই ভয়াবহ দুঃসংবাদের পর আজ শনিবার ক্রিকেট মাঠে ছড়িয়ে রইল শোকের আবহ। বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র করে ফেলেছে আফগানিস্তান।
২৪ ঘণ্টা আগেই সারা দুনিয়াকে স্তব্ধ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন লেগ স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন। আজ মিরপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচর প্রথম ইনিংস শেষে ওয়ার্নকে নিয়ে দীর্ঘ স্মৃতিচারণ করলেন আফগান লেগ স্পিন তারকা রশিদ খান। মাত্র ৫২ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে ওয়ার্নের মৃত্যু তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।
রশিদ বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে এটা এমন এক সত্য যেটা মেনে নেওয়া কঠিন। শুধু আমি না গোটা ক্রিকেট বিশ্ব স্তব্ধ। খুব দ্রুত তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে দিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে মানতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে আপনি যদি লেগ স্পিনার হয়ে থাকেন, শেন ওয়ার্ন অবশ্যই আপনার জন্য অনুপ্রেরণা। শব্দ দিয়ে আমি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারব না। তাঁর পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের জন্য সমবেদনা। এই শোক বহন করার শক্তি দান করুক। এটা প্রমাণ করে যে, জীবন কতটা অনিশ্চিত। আপনি কখনোই জানবেন না কখন আপনার সময় চলে আসবে। আপনার সময় আসলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। আমি মনে করি, নিজেদের প্রত্যেকের আজকের অবস্থানের জন্য আমাদের খুশি থাকা উচিত। নিশ্চিতভাবেই এটা ক্রিকেটের ক্ষতি। ক্রিকেটারদের জন্যও এটা বিরাট ক্ষতি। ‘
ওয়ার্নের সঙ্গে কাজ করার স্মৃতিচারণ করে রশিদ আরও বলেন, ‘আমার জন্য বিশাল সম্মানের বিষয় যে, এমসিজিতে আমি তাঁর সঙ্গে বোলিং করেছি। আমরা সেদিন আমার লেগ স্পিন নিয়ে কথা বলেছি। আমি লম্বা ফরম্যাটে কীভাবে বল করব তা নিয়ে ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলার জন্য উদগ্রীব ছিলাম। উনি সবসময়ই আমাকে সাহায্য করার জন্য রাজি ছিলেন। যখনই বিগ ব্যাশে খেলতে যেতাম তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। এ বছরও আমি লম্বা ফরম্যাটে বোলিংয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছি। এই খবরটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমার এখনও ওই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। যখনই তাঁর চলে যাওয়ার খবরটা শুনলাম আমার সেই এমসিজির দিনটার কথা মনে এসেছে, কতটা ভাল এবং বন্ধুসুলভ ভাবে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। ‘
রশিদ জানান, ওয়ার্নকে হারানোর শোকে ম্যাচের আগের দিন রাতে তিনি ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেননি, ‘উনি তাঁর অভিজ্ঞতা আমার সঙ্গে শেয়ার করতে চেয়েছেন। এটা ক্রিকেটের জন্য বিশাল ক্ষতি। আজ ম্যাচের জন্য তৈরি হওয়াটা খুব কঠিন ছিল। আমি বুঝছিলাম কিভাবে নিজের খেলাটা খেলব। সারাটা রাত তাঁর কথাই শুধু ভাবছিলাম। এমনকি আমি সকালে উঠেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না! কয়েকবার ফোন চেক করেছি যে কাল সত্যিই কি এমন কিছু হয়েছিল? কিন্তু এটাই জীবন। আপনি কখনই জানবেন না আপনার সময় কখন শেষ হবে। মেনে নিতেই হবে। তবে ওয়ার্নের চলে যাওয়াটা খুব দ্রুত।