রবিবার (১২ই ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ট্রেন যাত্রা শুরু করে। সকাল ১১টায় আগারগাও স্টেশনে প্রবেশ করে ১১টা ৪৫ মিনিটে আবারও উত্তরা দিয়াবাড়ির দিকে রওনা দেয় মেট্রোরেলটি। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৫ কিলোমিটার।
সাড়ে তিন মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট রান শুরু হলেও এতদিন ট্রেন চলাচল দিয়াবাড়ি থেকে কাছাকাছি চার পাঁচটি স্টেশনে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৯- এ। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচলের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করার কথা জানায়।
পারফরম্যান্স টেস্টের অংশ হিসেবে এর আগেও ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটার গতিতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে চলাচল করেছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার।
আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এ অংশে বাণিজ্যিক চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ (ডিএমটিসিএল)।
মেট্রোরেলের প্রতি কোচে ৪৮ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন। মাঝখানের চারটি কোচ হবে মোটরকার। এতে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে যেতে পারবেন ৩০৬ জন। প্রতিটি কোচ সাড়ে ৯ ফুট চওড়া। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবে।
দাঁড়ানো যাত্রীদের ধরার জন্য ওপরে হাতল এবং স্থানে স্থানে খুঁটি আছে। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে এবং দাঁড়িয়ে মিলিয়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী চড়তে পারবেন।
দিয়াবাড়ীর ডিপো থেকে ধাপে ধাপে ট্র্যাকে উঠেছে মেট্রোরেলের একেকটি ট্রেন সেট। শুরুটা হয়েছিল ডিপো থেকে স্টেশন এক পর্যন্ত। এরপর স্টেশন দুই, তিন হয়ে পল্লবী। এরই মধ্যে মিরপুর-১০ পর্যন্ত মেট্রোরেলের ট্রায়াল হয়ে গেছে। ট্রায়াল রানের জন্য তৈরি হয়ে গেছে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের অবকাঠামোও।
এ পথেই আজ মেট্রোরেল যাত্রা শুরু করেছে। মেট্রোরেল পুরোপুরি বিদ্যুৎচালিত। সংকেত, যোগাযোগসহ ১৭ থেকে ১৮টি ব্যবস্থা ট্রেন চলার ক্ষেত্রে কাজ করে।
২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। তবে উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা।