গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেছেন, প্রযুক্তির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সক্ষম হবো। তাই প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিকে বর্তমান সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাজধানী ঢাকার পরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য ঢাকা ডিটেইলড এরিয়া প্লান ড্যাপ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর পুরকৌশল বিভাগের উদ্যোগে আইইবি সদর দপ্তরের কাউন্সিল হলে ‘Surfside, Florida Building Collapse of June 2021 & ACI 318 Building Code Requirements for Structural Concrete’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আইইবি পুরকৌশল বিভাগের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার অমিত কুমার চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন, আইইবি পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। সেমিনারে অনলাইনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ইন্টারন্যাশনাল কোড কাউন্সিলের কনসালটেন্ট এবং এস.কে. ঘোষ এসোসিয়েটস, এলএলসি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ড. সত্যেন্দ্র কুমার ঘোষ (এস.কে. ঘোষ)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুজ্জামান। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. শামীম আখতার এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পঃ রাজউক অংশের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ হেলালী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। অন্যদিকে একটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ও দেশের অবস্থান তিনটি মহাদেশীয় টেকনিকেল প্লেটের সংযোগস্থলে হওয়ায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে অবস্থান করছে। তাছাড়া প্লাইস্টোসিন যুগ এর ফলন ভূমি এবং বৃহত্তর ব-দ্বীপ অঞ্চল হওয়ায় এদেশের মাটির গঠন অনেকটা কোমল প্রকৃতির।
তিনি বলেন, ঝড় জলোচ্ছ্বাস প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এদেশের বহুতল ভবনের স্থায়িত্ব কমে যায়। ফলে একদিকে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমাদেরকে যেমন বহুতল ভবন নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে স্থাপনার স্থায়িত্ব বাড়াতে তেমন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নির্মাণ সামগ্রী ও উন্নত নির্মাণ নিশ্চিত করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রকৌশল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা টেকসই অবকাঠামো নির্মাণে বড় ভূমিকা পালন করছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এদেশের প্রকৌশলীদের কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য নামকরা স্থাপত্য-স্থাপনা নকশা প্রণয়ন করেছে এদেশের অভিজাত ও মেধাবী প্রকৌশলীরা। তাদের সেই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যদি আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে টেকসই স্থাপনা নির্মাণের পাশাপাশি ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা আমাদের জন্য সহজ হবে। যা দেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত অত্যন্ত প্রয়োজন। এসময় তিনি বিদেশে অবস্থানরত খ্যাতমান প্রকৌশলীদের দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বলেন, বিএনবিসি কোড কোনভাবেই অমান্য করা যাবে না। বিএনবিসি কোড মেনে বিল্ডিং নির্মাণ করতে হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে কোডকে বাস্তব ভিত্তিক করতে হবে। তাহলে দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। বিএনবিডি কোডকে যেন কোনভাবেই ষড়যন্ত্রের বেড়া জালে আটকে না থাকে সেই আহ্বান জানান তিনি।
আইইবি পুরকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, একটি বিল্ডিং কাজ শুরু করার আগেই এর ডিজাইন ঠিক মতো চুড়ান্ত করতে হবে। বিল্ডিং এর ডিজাইন যদি চুড়ান্ত না করেই কাজ শুরু করা হয় বা ডিজাইনমত বিল্ডিং না করা হয় তাহলে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েই যায়। এছাড়া বিল্ডিং তৈরীতে ব্যবহৃত জিনিসপত্রর গুণগতমান ঠিক রাখতে হবে।