কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী তিথি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হলো। বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তবে মামলা থেকে তিথি সরকারের স্বামী শিপলু মল্লিককে অব্যাহতি দেন আদালত।
এদিন আসামি তিথি সরকার ও তার স্বামী শিপলু সরকার আদালতে উপস্থিত হন। এরপর তাদের আইনজীবী মামলার দায় হতে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। অন্য দিকে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তিথি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। তবে তিথি সরকারের স্বামী শিবলু মল্লিককে মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩১ অক্টোবর সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম দেখতে পায়, সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ের চারতলা থেকে তিথি সরকারকে ‘হাত পা-বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে’ বলে একটি মিথ্যা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হয়। এটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে সিআইডিতে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনার তদন্তে নেমে গুজব রটনাকারী নিরঞ্জন বড়াল নামের একজনকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিরঞ্জনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ২ নভেম্বর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। চলতি বছরের ১৯ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করে আসছিলেন তিথি সরকার। পরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তিথি সরকারের বহিষ্কার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তিথি সরকারকে সাময়িক বহিষ্কার করে। এরপর তার পরিবার থেকে অভিযোগ আসে তিথি নিখোঁজ। এরপর ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।