মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ১৫ দিনের ব্যবধানে আরো দুই কোটি ৪৩ লাখ সাত হাজার ৮৭৮ টাকার চেক জালিয়াতি ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ১৬টি চেকে এ জালিয়াতি ধরা পরে। এনিয়ে চলতি মাসেই তিন দফায় পাঁচ কোটি টাকার জালিয়াতি ধরা পড়ে।
এর আগে, ৭ অক্টোবর ৯টি চেকে আড়াই কোটি টাকার জালিয়াতি ধরা পড়ে। প্রথম জালিয়াতির ঘটনায় ঘটনায় দুদক মামলা করেছে। এরপর ১১ অক্টোবরে আরো একটি চেকে ১৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার জালিয়াতি ধরা পড়ে। এ নিয়ে তিন দফায় ২৬টি চেকের মাধ্যমে পাঁচ কোটি ১০ লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি ধরা পড়লে গোপনে দুদকে আরো একটি অভিযোগ দেয় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের হিসাব ও অডিট শাখার উপ-পরিচালক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এ অনিয়মের সঙ্গে বোর্ডের হিসাব সহকারী আব্দুস সালাম ও ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বাবু জড়িত।
তাদের বিরুদ্ধে এর আগে গত ৭ অক্টোবর আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। যে ঘটনায় দুদক ইতিমধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব, হিসাব সহকারী আব্দুস সালামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
সবমিলে মোট ২৬টি চেকে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪২ টাকার বিপরীতে পাঁচ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৮ টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ পেয়েছে অডিট শাখা।
সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হলেও চেক ৯টি দিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং শাহী লাল স্টোর নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। ৭ অক্টোবর এ ঘটনা প্রকাশ পাবার পর বোর্ডের হিসাব ও অডিট বিভাগ তাদের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা অব্যাহত রাখেন। ফলে ১৮ অক্টোবর পাঁচটি চেকে চার লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৪ টাকার স্থলে ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৯ টাকা উত্তোলনের তথ্য মেলে। এরপর ২১ অক্টোবর ১১টি চেকের বিপরীতে ১০ লাখ ১৫ হাজার ২৬৬ টাকার স্থলে দুই কোটি ২১ লাখ ৮ হাজার ৯৪৯ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়।
এরপর বিষয়টি হিসাব শাখা থেকে বোর্ডের সচিবকে পত্র দিয়ে অবহিত করা হয়। ওই দিনই বোর্ডের সচিব দুদক যশোরে নতুন করে দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দাখিল করেন।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের হিসাব ও নীরিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক এমদাদুল হক জানান, আমরা আরো প্রায় আড়াই কোটি টাকার চেক জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছি। দুদকে ২১ অক্টোবর আরো একটি অভিযোগ জমা দিয়েছি। ওই সময় বর্তমান বোর্ড চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বোর্ডের সচিব ছিলেন। হিসাব সহকারী আবদুস সালাম তখনও হিসাব শাখার দায়িত্বে ছিলেন। এ সকল অনিয়মের সাথে সারাসরি জড়িত আব্দুস সালামের অন্যতম সহযোগী বোর্ডের ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বাবু।
দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, আমাদের কাছে আরো প্রায় আড়াই কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ করা হয়েছে। কারা করেছে তা খুঁজে বের করা হবে। এর আগে ১৮ অক্টোবর আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করে দুদক।