অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নেতারা বিজ্ঞাপনবিহীন বা ক্লিন ফিড বিদেশি চ্যানেল প্রচারের বিপক্ষে নন বলে জানিয়েছেন। তবে নেতারা বলেছেন, শুধু বাংলাদেশি ৩৪টি চ্যানেল দিয়ে কেবল অপারেটর সেবা চালু রাখলে গ্রাহক ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
নেতারা আশঙ্কা করছেন, গ্রাহকেরা তাদের নিজেদের স্বার্থে ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে চলে যাবেন। এতে দ্রুত গ্রাহক কমে যাবে। কেবল অপারেটর ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একপর্যায়ে তাদের পক্ষে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দুরূহ হবে।
ক্লিন ফিড বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রাখার প্রেক্ষিতে শনিবার বিকালে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে কোয়াব নেতারা এসব কথা বলেন।
কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ বলেন, সরকার যে অর্ডার দিয়েছে- আমরা সেটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছি। তথ্য মন্ত্রণালয় আমাদের অভিভাবক। কেবল অপারেটরদের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন করছি, ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত অন্তত যেসব বিদেশি চ্যানেলগুলো বন্ধ আছে, সেই চ্যানেলগুলো যেন আমরা পুনরায় সচল করতে পারি, সে ব্যাপারে যেন তিনি একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কোয়াব সভাপতি আনোয়ার পারভেজ ২০০৬ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনটি সংশোধনের দাবি জানান।
কোয়াব সভাপতি বলেন, ‘২৫ বছরে তিলে তিলে গড়ে তোলা আমাদের এই কেবল ইন্ডাস্ট্রি। এখানে আমাদের ৪ লাখ মানুষের রুটিরুজির বিষয় জড়িত। ইউটিউবের রমরমা অবস্থা। যেসব বিদেশি চ্যানেল বাংলাদেশে বন্ধ হয়েছে, সেসব চ্যানেল তাদের প্রতিটি সিরিয়াল সঙ্গে সঙ্গে ইউটিউবে আপলোড করে দিচ্ছে। সেখানে কিন্তু বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন ইউটিউবে যাচ্ছে। এই টাকাটা কিন্তু চলে যাচ্ছে ইউটিউব কোম্পানির কাছে। ’
দেশের বাইরে থেকে অনেকগুলো অ্যাপস চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হইচই, নেটফ্লিক্স, আমাজন, হট স্টার, জি-ফাইভ। এরা কিন্তু বাংলাদেশ থেকে গ্রাহক নিচ্ছে। কোনো বৈধ উপায়ে তারা গ্রাহক নিচ্ছে না। এরা কিন্তু গ্রাহকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে।’
কোয়াব সভাপতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিদেশি চ্যানেল বন্ধ থাকলেও গ্রাহক বসে থাকবেন না। মানুষ কিন্তু বসে থাকবে না। সুইচ করবে, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যাবে। এই সুইচ করার ফলে যদি কেবল টিভি নেটওয়ার্কের ব্যবসা রাস্তায় বসে যায়, আমরা যদি এই সেক্টরে জড়িত মানুষকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিই, তাহলে এর দায়ভার কে নেবেন?
সংবাদ সম্মেলনে কোয়াবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম সাইফুল হোসেনও একই আশঙ্কা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বিদেশি চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রাহক হারিয়ে ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হবে। শুধু ৩৪টি বাংলা চ্যানেল দিয়ে গ্রাহক ধরে রাখা সম্ভব নয়। দর্শকের বিনোদন চাহিদা পূরণ করার জন্য কেবল টিভি একমাত্র মাধ্যম না।