বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাগানে একটি ‘হানি লোকাস্ট’ গাছের চারা রোপণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে তার বাণীসংবলিত একটি বেঞ্চও উন্মুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার স্থানীয় সময় সকালে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের উত্তর লনে এ বৃক্ষরোপণ ও বেঞ্চ উন্মুক্ত করেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি একটি বিশেষ দিন। কারণ আমাদের যুদ্ধ বিজয়ের পর ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ১৭ সেপ্টেম্বর স্বীকৃতি পাওয়ার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে আসেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি (বঙ্গবন্ধু) ভাষণ দেন। সেই ভাষণটি তিনি দিয়েছিলেন বাংলা ভাষায়।
তিনি বলেন, এই সেপ্টেম্বর মাসে এত চমৎকার একটি জায়গায় চেয়ার উৎসর্গ করা হলো এবং একটি বৃক্ষরোপণ করা হলো। শতবর্ষের ওপর এই বৃক্ষটি টিকে থাকবে এবং শান্তির বারতা বয়ে বেড়াবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি চেয়ার উৎসর্গ করা হলো, একটি বৃক্ষরোপণ করা হলো। বৃক্ষ এটি পরিবেশও রক্ষা করে, মানুষকে খাদ্য দেয়, মানুষকে ছায়া দেয় এবং মানুষের জীবনকে রক্ষা করে। আর চেয়ারটার এটিই সবচেয়ে বড় বিষয়— মানুষ এখানে শান্তিতে বসবে, কিছুক্ষণ আরাম করবে এবং চিন্তা করবে।
‘আর জাতিসংঘের এ জায়গায় বসে থাকলে শুধু নিজের চিন্তা না, বিশ্বের মানুষের কথা চিন্তা করবে। সবচেয়ে বড় কথা— জাতির পিতা সবসময় শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন, সংগ্রাম করেছেন দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখের কথা যেমন ভেবেছেন, সারা বিশ্বের যারা ক্ষুধা দারিদ্র্যে জর্জরিত, শোষিত-বঞ্চিত মানুষ, তাদের কথাও তিনি (বঙ্গবন্ধু) বলেছেন।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার যে লক্ষ্য ছিল— সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। এটিই ছিল উনার জীবনের লক্ষ্য— সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলা। কারণ তাতে শান্তি আসবে এবং শান্তির সন্ধানেই তিনি সবসময় ছিলেন, শান্তির জন্যই সংগ্রাম করেছেন। শান্তি ছাড়া কখনও কোনো দেশের উন্নতি হয় না। এটি আমরা নিজেরা খুব ভালো বুঝি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সবসময় উন্নতি হয়।
বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের বাগানে বৃক্ষরোপণ এবং বেঞ্চ উৎসর্গ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্বের সব শহীদ শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।