গুলি ছোড়া কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা মো. গিয়াস উদ্দিন ওরফে সুজনকে ঢাকায় গ্রেফতার করেছে র্যাব। এই নেতা কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য ছিলেন। তাকে গতকাল (৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এই যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে সংঘর্ষের ঘটনার দিন প্রকাশ্যে গুলি ছুড়েছিলেন। সেই গুলি ছোড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
গিয়াস উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে চট্টগ্রামের খুলশী থেকে তার সহযোগী মাঈনউদ্দীনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় মাঈনউদ্দীনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তুল, একটি রিভলবার ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব–৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার গণমাধ্যমকে জানান, চন্দনাইশের হাশিমপুরে আলোচনা সভায় গুলিবর্ষণ ও নাশকতার সৃষ্টির ঘটনায় চন্দনাইশ থানায় গত বৃহস্পিতবার একটি মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনার র্যাবের পক্ষ থেকে ছায়া তদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে এই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ আগস্ট উপজেলার হাসিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বাগিচাহাট পেট্রোলপাম্পসংলগ্ন হল-২৪ এ জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর শোকসভা ও ২১শে আগস্টের শহীদদের সরণে আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহাফিলের আয়োজন করা হয়।
ওই অনুষ্ঠানের শেষ আংশে সভাপতি মাহাবুবুল আলম বাবুলের বক্তব্য দেওয়ার সময় দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির পদ বঞ্চিতছাত্রলীগ কর্মী ও যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় উভয়পক্ষ গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাংচুর করে শোকসভা পণ্ড করে দেয়। এতে
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জনু ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার লোকমান হাকিম ও যুবলীগ নেতা নুরূল আমিনসহ চারজন আহত হন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান।
তবে সাবেক যুবলীগ নেতা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন সভা শেষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওপর বাগিচাহাট অংশে আগুন জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল প্রায় এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেন। এ সময় প্রকাশ্য সড়কের উপর যুবলীগ নেতা আস্ফালন করে শতশত লোকের সামনে হাত উঁচিয়ে আকাশের দিকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেন। হঠাৎ সড়ক অবরোধ করলে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারমুখী দূর-পাল্লারবাস যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
আওয়ামী লীগের শোকসভায় গোলাগুলির ঘটনায় যুবলীগ- ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য আবুল ফয়সাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জাহানগীর বলেন, গিয়াস উদ্দিন সুজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক তৌহিদুল আলম বলেন, গিয়াস উদ্দিন সুজন উপজেলা যুবলীগ কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।