নাগেশ্বরী উপজেলায় মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে ফোনে দুইটি খুদেবার্তা দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ বার্তায় বিভ্রান্তিতে পড়েছেন কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহীতারা।
দ্বিতীয় টিকার ডোজ গ্রহণ না করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ ম্যাসেজে নিশ্চিত করছে টিকা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ যেন এক তুঘলকি কারবার।
জানা যায়, গত ১৪ জুলাই নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেন ১১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৮ জন এবং মহিলা ৪৬ জন। প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণের এক মাস পরে ১৪ আগস্ট তাদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের তারিখ পড়ে।
শুক্রবার ১৩ আগস্টের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের এসএমএসের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা থাকলেও ওই দিন কোনো টিকাভোগীর এসএমএম আসেনি। এসএমএস না পাওয়া অনেকেই কেন্দ্রে যাননি। ফলে ১৪ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ নেয়া হয়নি অনেকের।
কিন্তু হঠাৎ করেই সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরপর ২টি খুদেবার্তা কারও কারও ফোনে আসে। একটিতে ওই দিনেই তাদের ২য় ডোজ নিতে বলা হয়। আবার অন্যটিতে জানানো হয় আপনার ২য় ডোজ গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে এ দুটি ম্যাসেজ পেয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন টিকার প্রথম ডোজ গ্রহীতারা। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ গ্রহণের আগেই যদি তা সম্পন্ন হয় তাহলে সেটি কাকে দেয়া হলো এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে।
উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সেনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শ্রাবণী দে বলেন, কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিতে যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের ফোনে ম্যাসেজ দেখাতে না পারলে টিকা কেন্দ্রে ব্যাপক হয়রানি হতে হয়। তাই গত ১৪ আগস্ট তার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের কথা থাকলেও ম্যাসেজ না পাওয়ায় যেতে পারিনি। অথচ সে ম্যাসেজ এসেছে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে। আরও অবাক করার বিষয় তার ঠিক ৫ মিনিট পরে সাড়ে ৭টায় ম্যাসেজ আসে আমার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আমি তো ২য় ডোজ গ্রহণ করলাম না। তারপরেও ২য় ডোজ সম্পন্ন ম্যাসেজ আসল। এই ম্যাসেজ বিড়ম্বনায় আমার ২য় ডোজ নেয়াই হলো না অথচ তার আগেই নাকি তা সম্পন্ন হয়েছে। এটি কীভাবে সম্ভব?
কচাকাটা থানার বাসিন্দা শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল কুদ্দুস চঞ্চল বলেন, ১৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা ২৭ মিনিট ম্যাসেজ আসল ২য় ডোজ গ্রহণের; এর কিছুক্ষণ পরেই ৭টা ৩২ মিনিটে আরেকটি ম্যাসেজ আসল আমার দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। কীভাবে এটি সম্ভব হলো বুঝতে পারছি না? এখন প্রশ্ন হলো আমার ২য় ডোজ টিকা কাকে দেয়া হলো?
নেওয়াশী ইউনিয়নের জয়মঙ্গল গ্রামের এগার মাথার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ম্যাসেজ ঝামেলায় পড়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেয়া হয়নি। এমন দশা অনেকেরই হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল হোসেন বলেন, কারিগরি ত্রুটির জন্য এমনটি হয়েছে। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।