গত জুলাই মাসে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ৯৮ শতাংশেরই শরীরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হল থেকে এ ফল প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
২০২১ সালের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত গবেষণা চালানো হয়। জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপাচার্য নিজেই।
এসময় উপাচার্য বলেন, ‘গবেষণায় দেশের সব বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়েছে। মোট ৩০০ করোনা পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে।’
তিনি জানান, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করোনা আক্রান্তদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ। এই গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছর বয়সী পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৩০-৩৯ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা ছিল বেশি। যেহেতু কোনো বয়স সীমাকেই করোনার জন্য ইমিউন করছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও যে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি নেই, তা বলা যাচ্ছে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা রোগীদের মধ্যে যাদের ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস তাদের মৃত্যু হার বেশি। পাশাপাশি ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। যদিও এ গবেষণায় টিকার কার্যকারিতার বিষয়টি চলমান রয়েছে।
করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, দেশে গত ডিসেম্বরে ইউকে বা আলফা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। পরে মার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। গত এক মাসের ৩০০ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ।
এদিকে বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যান আরও ২৪১ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৬৩৮ জনে। এছাড়া, একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয় আরও ১৩ হাজার ৮১৭ জনের।