মতিঝিল বিভাগে চাঁন-জাদু ও ব্যান্ডেজ গ্রুপের ৩২ কিশোর সক্রিয় রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তালিকা করে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেফতাররা হলো- চাঁন-জাদু গ্রুপের লিডার মো. জাদু, মো. রবিন ও নয়ন ইসলাম শুভ। ব্যান্ডেজ গ্রুপের মো. হিরা ও মো. রিপন। চাঁন-জাদু গ্রুপের জাদুকে গ্রেফতার করতে পারলেও গ্রেফতার হয়নি চাঁন।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত মুগদা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে মুগ্দা থানা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুই কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা দলবেঁধে চলাফেরা করে জনমনে আতংক সৃষ্টি করত। নির্দিষ্ট গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিও করত তারা।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মতিঝিল বিভাগের ডিসি মো. আ. আহাদ।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ করে এ দুই কিশোর গ্রুপের ৩২ জনের একটি তালিকা আমরা তৈরি করেছি। এরপর মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে এ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, এই দুই কিশোর গ্যাং সদস্যরা স্মার্টফোন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ করত। রাস্তায় চলাচলরত নারীদেরকে উত্যক্ত করা, ছিনতাই, মাদক সেবন, ইভটিজিং, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা।
এছাড়া তারা প্রায়ই এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার জন্য দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে। ডিসি আ. আহাদ আরও বলেন, মতিঝিল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে তারা একাকি পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে। এরপর আশেপাশে কেউ বুঝে ওঠার আগেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর করে মানিব্যাগ, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেত।
তিনি বলেন, তারা গ্যাং কালচারের নেমে নিজেদের হিরোইজম প্রদর্শন করতো। তারা পরিবারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সমাজে অরাজকতা তৈরি করত। তারা দল বেঁধে চলাফেরা করে জনমনে আতংক সৃষ্টি করে। কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্দিষ্ট গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারিতে লিপ্ত হতো।
তিনি আরও বলেন, এ গ্যাং ২টির সদস্যরা বিভিন্ন অনলাইন গেমের নামে সমবয়সী কিশোরদের সংঘবদ্ধ করে জুয়া খেলতে উৎসাহ প্রদান করে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের ইন্ধনদাতা হিসেবে যদি প্রভাবশালী কেউ, এমনকি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কেউ জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আমরা এরইমধ্যে কমিয়ে এনেছি।