সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

‘যশ’ না হয়ে ‘ইয়াস’ কেন ঘূর্ণিঝড়ের নাম? যেভাবে এলো এই নাম

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে।

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং নিম্নচাপের পর্যায় অতিক্রম করেছে। সোমবারের মধ্যে পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইয়াস’।

বাস্তবের আগেই ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বেশ কয়েকদিন ধরেই ঝড়টির নাম নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন নেটিজেনরা।

কেউ লিখছেন ইয়াস (ইয়াশ),  কেউ লিখছেন যশ বা জোশ।

আসলে ঘূর্ণিঝড়টির নামের উচ্চারণ কী হবে? 

এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক বলেন, ‘এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ওমান, ভারত নয়। ওমানের বানান অনুযায়ী (ওয়াই, ডাবল-এ, এস)  উচ্চারণ হয় ইয়াস। যারা যশ লিখছেন তারা কেন লিখছেন তারা বলতে পারবেন।’

অনেকেই মনে করছেন ঝড়টি যেহেতু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট আর ধেয়ে আসছে ভারতের দিকে। হয়তো এটি হিন্দি শব্দ – ইয়াশ। যাকে বাংলায় যশ বলা যায়। যুবরাজকে যেভাবে হিন্দি ভাষায় ইয়ুভরাজ বলা হয়।

কিন্তু আসলে পুরো ব্যাপারটিই ভুল। ঘূর্ণিঝড়টির নাম ভারতীয় শব্দ নয়, ‘ইয়াস’মূলত ফার্সি শব্দ। ওমানের দেওয়া এই আরবি শব্দের নামের অর্থ ‘মরিয়া’। আরেকটি অর্থ বলছে এটির অর্থ ‘হতাশা’, বা ‘দুঃখ’।

অন্য আরেকটি অর্থ বলছে – একটি একটি ফুলের নাম, জুঁই ফুলের মতোই সুগন্ধি ঝিরঝিরে সাদা কোনো ফুল।

এই তিন অর্থের যেটাই ধরে নেওয়া হোক, এর নাম যশ বা জোশ নয়। এর নাম ইয়াস। ভারত নয়, এবারের ঝড়টির নাম দিয়েছে ওমান।

ঘূর্ণিঝড়ের এই নামের উচ্চারণ নিয়ে বিভ্রান্তি অবশ্য ইয়াসের বেলায়ই হচ্ছে না, এর আগে কয়েকবার এমনটি ঘটেছে।

গত বছরের মে মাসে বঙ্গোপসাগরেই তৈরি হওয়া অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের উচ্চারণ নিয়েও ওই সময় তৈরি হয়েছিল বিভ্রান্তি।

ওই সময় ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে কেউ কেউ  লিখছিল ‘আম্পান’ আর কেউ লিখছিল ‘উমপুন’। বাংলাদেশ লিখেছিল আমফান ও আম্পান।

সম্প্রতি ভারতের গুজরাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় তাউটের নামও একেক জায়গায় একেকটা লেখা হয়েছে।

মিয়ানমারের আবহাওয়াবিদদের প্রস্তাবিত বার্মিশ শব্দ ‘তাউট’। বানান অনুযায়ী এর উচ্চারণ ‘তাউকতায়ে’। যার অর্থ টিকটিকি জাতীয় এক ধরণের সরীসৃপ। যে প্রাণী মুখ দিয়ে সজোরে আওয়াজ করে।

এমন সব অদ্ভূত নাম দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের। যেমন – আইলা, সিডর, মহাসেন, তিতলি, বুলবুল, ফণী, নির্ভার।

কীভাবে এসব নাম দেওয়া হয় সে বিষয়ে মানা হয় আন্তর্জাতিক একটি নিয়ম।

যেখানে বলা হয়েছে, যে মহাসাগরে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকার দেশগুলি সেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। সেইমতো বিশ্বে ১১ টি প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে।

২০০০ সালে ওমানের মাসকটে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড পেসিফিকের ২৭ তম বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল।

বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে উৎপত্তি হওয়া সব ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করতে সেই বৈঠকে রাজি হয়েছিল সংগঠনটি।

সেই মতো ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হয়েছিল। সেই সময় আটটি দেশ নামের পরামর্শ দিত। পরবর্তী সময়ে সেই সংগঠনে আরও পাঁচটি দেশ যোগ দেয়।

আপাতত ওই সংগঠনের দেশগুলো হলো – বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মায়ানমর, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেন।

ইয়াসের পর আরও কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়েছে।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.