আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দলের তরুণ নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নয়নের সাথে যদি বিনয় যুক্ত হয় তাহলে দেশের মানুষ আবারো রায় দিয়ে আওয়ামী লীগকে এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিবে।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারণে আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছি. তাই বলে অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে আলস্য এসেছে, এই আলস্য কাম্য নয়। মনে রাখতে হবে বহু উন্নয়ন হয়েছে, সেই উন্নয়নের সাথে যদি আমাদের তরুণ কর্মীদের আস্ফালন থাকে মানুষ সেই উন্নয়ন ভুলে যাবে, আমাদেরকে পছন্দ করবে না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জননেত্রী শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানরগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, যুগ্ন সম্পাদক সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম, আলহাজ আবদুচ ছালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি, এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আলহাজ দিদারুল আলম চৌধুরী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, আবদুল লতিফ টিপু, জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিইনসি, হাজী ইউনুছ কোম্পানি প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিপক্ষ তারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা ষড়যন্ত্র করেছিল। এখনো যারা বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতিপক্ষ তারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। সেজন্য ডা. জাফর উল্যাহ চৌধুরী ঢাকার বুকে ও রাজশাহীতে মিজানুর রহমান মিনু আস্ফালন করেন, আবার একটা ১৫ আগস্টের ইঙ্গিত দেন। তারা যে ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র করছে এগুলো সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। তাই আমাদেরকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, গত ৪০ বছর ধরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে. ২১ বছর ধরে আমাদের শুনতে হয়েছে আওয়ামী লীগ কখনো রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারবে না। যারা সেই কথা বলতো তাদের আস্ফালনকে মিথ্যে প্রমাণিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার স্বার্থকতা সেখানে যেই পাকিস্তানিরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর বলতো বাংলাদেশ আদৌ রাষ্ট্র হিসেবে ঠিকে থাকতে পারবে কিনা। সেই পাকিস্তান এখন বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কারণ আমরা মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সমস্ত সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে গেছি। মানব উন্নয়ন ও সামাজিক সূচকে অনেক আগেই ভারতেকে অতিক্রম করেছি আমরা। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশে আসার পর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ নিহতদের মাগফেরাত কামনায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে একটি মিলাদ পড়াতে যেতে চেয়েছিলেন, জিয়াউর রহমান সেই মিলাদ পড়াতে দেননি, ৩২ নম্বরে ঢুকতেও দেননি। সেই কারণে ৩২নম্বরের সামনের রাস্তায় বসে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে মিলাদ পড়াতে হয়েছিল। এমনকি টুঙ্গিপাড়ার বাড়িতেও যেতে দেওয়া হয়নি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যাতে এদেশে আসতে না পারেন সেজন্য তৎকালীন জিয়াউর রহমানের সরকার বহু ষড়যন্ত্র করেছে। জিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিল শেখ হাসিনা যদি এদেশে আসে তাহলে এদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। বহু রক্তচক্ষু ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার দেশে আসা নিষ্কণ্ঠক ছিল না।
তিনি বলেন, যেই গণতন্ত্র সামরিক ছাউনির মধ্যে বন্দি ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেই সামরিক ছাউনি থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে এনেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভোটের ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার আসনে আসীন করেছেন।