ঢাকাসহ সারা দেশে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহণ চলাচল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর গণপরিবহণ চালুর প্রথম দিনেই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে তীব্র যানজট দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানবাহন আটকে থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে যাওয়ার জন্য অনেককে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে।
ঢাকায় স্বাস্থ্যবিধি সামান্য মানা হলেও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও রংপুরসহ বিভিন্ন শহরে মোটেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। কোনো কোনো জেলায় পরিবহণের ভাড়া দ্বিগুণ আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহণ শ্রমিকদের বাগবিতণ্ডায় জড়াতেও দেখা যায়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সারা দেশে ৫ এপ্রিল লকডাউন জারি করে সরকার। এতে বাস, লঞ্চ, ট্রেনসহ সব গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শুধু মহানগর এলাকায় বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। ১৪ এপ্রিল থেকে আবার সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ালেও সরকার বৃহস্পতিবার থেকে জেলার অভ্যন্তরে বাস চলাচলের অনুমতি দেয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকার রাস্তায় হঠাৎ মানুষের আনাগোনাও বেড়ে যায়। কোনো কোনো সড়কে যানজটের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, রাস্তার দুই দিকে দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকে থাকে। ঢাকার পল্টন, মগবাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাড্ডা ও বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যায়।
তবে বাসে যাত্রী তুলনামূলক কম ছিল। দুই সিটে একজন যাত্রী বহন করা হয়। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যাত্রীদের জন্য ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাস বন্ধ থাকায় মগবাজার থেকে মতিঝিল রিকশা ভাড়া ৮০-১০০ টাকা গুনতে হতো। বাস চলাচল শুরু হওয়ায় ১৫ টাকায় যেতে পারছি। তিনি বলেন, বাস না থাকলে রিকশার সংকটও দেখা দেয়। গণপরিবহণ চালু হওয়ায় প্রচণ্ড যানজটে পড়তে হয়েছে। মগবাজার থেকে মতিঝিল যেতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। টঙ্গী থেকে বাড্ডায় এসেছেন তারিকুল ইসলাম। তিনি জানান, গাজীপুর থেকে সরাসরি বাসে গন্তব্যে গেছেন। তিনি বলেন, সরকারের আদেশে বলা হয়েছে- জেলার অভ্যন্তরে বাস চলাচল করবে। এতে একটু চিন্তায় পড়েছিলাম। কিন্তু রাস্তায় এসে দেখি গাজীপুর থেকে ঢাকায় চলাচলকারী সব বাসই চলছে।
স্বস্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, এতদিন শেয়ারে সিএনজি অটোরিকশায় গাদাগাদি করে চলাচল করেছি। বাসে দুই সিটে একজন হওয়ায় সেই কষ্ট পেতে হয়নি। তবে যানজটে পড়তে হয়েছে।
গুলিস্তান থেকে গুলশানে আসা একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, পথে পথে দেখলাম যানজট। গুলশানে আসতে তার এক ঘণ্টা ১০ মিনিট লেগেছে।