রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন

সবশেষ শারীরিক অবস্থা খালেদা জিয়ার

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ‘আপাত’ কোনো উন্নতি বা অবনতি দেখা যাচ্ছে না। চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতরা তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ উল্লেখ করেই বলছেন, ‘আসলে অবস্থাটা প্রেডিক্ট করা যাচ্ছে না’।

তাছাড়া করোনাভাইরাস পরীক্ষায় খালেদা জিয়ার রিপোর্ট  নেগেটিভ এসেছে, এমন তথ্যও এখন পর্যন্ত দল বা চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আসেনি।

যদিও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বুধবার (৫ মে) দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন খালেদা জিয়া পোস্ট কভিড জটিলতায় ভুগছেন। তিনি বলেন, ‘পোস্ট কভিড জটিলতা থাকে যা মাঝে মধ্যেই টার্ন নেয় বিভিন্ন দিকে। ওনার (খালেদা জিয়া) যে বয়স, বিভিন্ন রোগ আছে। এর আগে তিন বছর কারাগারে ছিলেন। এ অবস্থায় তাঁর কিছু জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে মাঝে মধ্যেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব ধরনের চিকিৎসা তাঁকে (খালেদা জিয়া) দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা আন্তরিকতা নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা বিদেশে নিয়ে আরো উন্নত চিকিৎসা দেওয়া।’ পরিবার থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা করেন, ‘মানবিক কারণে সরকার বিএনপি নেত্রীর বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে’।

বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ১১ই এপ্রিল। সিটি স্ক্যান রিপোর্টে তাঁর ফুসফুসে পাঁচ শতাংশ সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর গত ২৫শে এপ্রিল খালেদা জিয়ার দ্বিতীয়বারের মতো করোনা পরীক্ষা করা হলে সেখানেও তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে জটিলতা দেখা দেওয়ায় গত ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো, তবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এর পর গত ৩ মে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউতে নেওয়া হয় এবং অক্সিজেন দিতে হচ্ছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন।

সিসিইউতে খালেদা জিয়া স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছেন ও কথা বলছেন বলেও জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসকরা।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস বা আর্থরাইটিসসহ নানা রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এখন ডায়াবেটিসের কারণেও তার অন্য চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তাঁর চিকিৎসা দলের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকরা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে খালেদা জিয়ার অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি বরং শ্বাসকষ্টের সঙ্গে  বুকে ব্যথার প্রবণতাও দেখা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে উন্নত  চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে তাঁর পরিবার।

খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গতকাল বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। শামীম ইস্কান্দার জানান, চিকিৎসকরা তাঁর বোন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেওয়ার পর তাঁরা সরকারের কাছে এই আবেদন করেছেন।

পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এই আবেদনটি সরকার ইতিবাচকভাবেই দেখছে। এর আইনি দিক পরীক্ষা করে দেখার জন্য আবেদনপত্রটি ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) আইনমন্ত্রী জানান, গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে সচিবদের কাছে এসেছে। ফাইলটি তাঁর কাছে পৌঁছালে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

এর আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছিল সরকার, তাতে বলা হয়েছিল মুক্তি পেয়ে খালেদা  জিয়াকে বাসায়ই থাকতে হবে এবং এ সময় তিনি বিদেশে  যেতে পারবেন না।

২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রথমে সেপ্টেম্বরে ও পরে চলতি বছরের মার্চে আবারো ছয় মাসের জন্য তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এর আগে ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত, তার পর থেকে প্রথমে কারাগারে বিশেষ ব্যবস্থায় ও পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ই নির্বাহী আদেশে বিশেষ শর্তে মুক্তির পর গুলশানের বাসায় ওঠেন খালেদা জিয়া।

শর্তগুলো ছিল: এই সময়ে তাঁর ঢাকায় নিজের বাসায় থাকতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

আগেও আবেদন করা হয়েছিল বিদেশ নেওয়ার:
এর আগে গত বছরের মার্চে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল খালেদা জিয়ার পরিবার। তাঁর বোন সেলিমা ইসলাম তখন বলেছিলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর এই চিঠিতে আমরা লিখেছি যে, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা পরিবারের সদস্যরা তাঁকে বিদেশে নিয়ে যেতে চাইছি। সেজন্য তাঁর মুক্তি প্রয়োজন। তাঁকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য মানবিক কারণে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হোক।’

তবে সেই চিঠিতে তখন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল বলে আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.