পরশের মৃত্যু নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও র্যাবের দেখানো তথ্যপ্রমাণে ‘সন্তুষ্ট’ বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তাই আলোচিত এই হত্যা মামলা নিয়ে আপাতত কোনো কর্মসূচি দিচ্ছেন না তারা।
ফরাদিনের মৃত্যু নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তাদের (র্যাব ও ডিবি) সঙ্গে সাক্ষাত্কারের সময় মূলত পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন তুলি।
তাদের দেখানো তথ্য প্রমাণের (এভিডেন্স এবং ডাটা) মধ্যে আমাদের করা প্রশ্নগুলোর মোটামুটি সন্তোষজনক উত্তর পেয়েছি। তাদের তদন্ত বা যা যা ডাটা দেখিয়েছেন এতে আর সন্দেহ করার মতো তথ্য আমাদের কাছে আর নেই।
আপাতত ফারদিনের মৃত্যুর বিষয়ে তাদের আর কোনো কর্মসূচি নেই জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এখন ফারদিনের পরিবার যদি যৌক্তিক কোনো কিছু দাবি করেন আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। তবে আমাদের কাছে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ বা প্রশ্ন করার মতো কোনো ‘এলিমেন্ট’ নেই। ভবিষ্যতে যদি নতুন করে কোনো তথ্য আসে তখন বিষয়টা নিয়ে আবার কথা বলব।
গত ১৪ ডিসেম্বর র্যাব ও ডিবি ফারদিনের মৃত্যু নিয়ে দাবি করে, ফারদিনকে হত্যা করা হয়নি। তিনি ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। র্যাব ও ডিবির তরফ থেকে এসব কথা জানানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে বুয়েট শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছিলেন তার সহপাঠী শিক্ষার্থী। পরে ডিবি কর্মকর্তাদের আহ্বানে তারা আত্মহত্যার প্রমাণের জন্য মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান। ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাদের প্রায় তিন ঘণ্টা আলোচনার হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের ২০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল উত্তরা র্যাব সদর দপ্তরে যান। সেখানে তারা ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে শিক্ষার্থীরা জানান, ফারদিনের মৃত্যুর পেছনে যেসব কারণ এবং তথ্য-প্রমাণ র্যাব তদন্ত করে পেয়েছে, সেগুলো বিস্তারিত তাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে গত ৪ নভেম্বর ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এক মাসের বেশি সময় তদন্তের পর গত বুধবার র্যাব ও ডিবি দাবি করে, ফারদিন ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ডিবি পারিবারিক চাপ, দুই ভাইয়ের পড়াশোনার টাকা জোগানো, ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে স্পেনে যাওয়ার টাকা সংগ্রহ করতে না পারাকে উল্লেখ করে।
যদিও ফারদিনের বাবা এ দাবি মানতে নারাজ। তিনি বরাবরই বলে আসছেন, ‘ ফারদিন আত্মহত্যা করেনি।