আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (৩০অক্টোবর) দুপুর ১২টায় সম্মেলন শুরুর পর, বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী জিএম ওসমানী হাসানের বক্তব্যের পরপরই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান ‘আক্রমণাত্মক’ বক্তব্য দেন।
তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে প্রতিবাদ করেন আমতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছাসহ কয়েকজন নেতা।
এ নিয়ে দুগ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, চেয়ার ভাঙচুর ও মারধের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই মাঠটি রণক্ষেত্রে পরিণত হলে নেতাকর্মীরা ছুটোছুটি করে সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন। তাৎক্ষণিক এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে তাদের এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতরা হলেন চ্যানেল ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার আবু জাফর সালেহ, দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি শাহ্ আলীসহ চার সাংবাদিক। এ ছাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জিএম ওসমানী হাসান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর জিএম মুছা, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকানের পুত্র মুবদি সরোয়ার সোহম, সোহেল, রুবেল, তাজুল ইসলাম মধু মোল্লা, রাকিবুল ইসলাম, আলী হোসেন, শাহিন, বায়জিদ ও প্রত্যক্ষদর্শি ময়জদ্দিন ঘরামী। আহতরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পটুয়াখালী ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, ‘আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে অনেকে পটুয়াখালী ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে জিএম মুছা, সোহেল রানা, বায়েজিতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ‘
আমতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছা বলেন, ‘আখতারুজ্জামান বাদল খানের উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এ হামলায় আমার পক্ষের ১৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ‘
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘জিএম মুছা ও তার ভাই হাসান, নাজমুল হাসান নান্নু, ফোরকান মিয়া, শাহজাহান কবির ও গাজী সামসুল হক সম্মেলন গণ্ডগোল করতেই সভা মঞ্চে এসেছেন। তারা সম্মেলন বানচাল করতেই সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। তাদের হামলায় আমার অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ‘
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।