বিশ্বব্যাংকের অর্থ বরাদ্দ বন্ধের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থ বরাদ্দ বন্ধের ষড়যন্ত্রের পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থ বরাদ্দ বন্ধের ষড়যন্ত্রের জন্য ড. ইউনূস, হিলারি ক্লিনটন ও টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী চেরি ব্লেয়ারকে অভিযুক্ত করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
এ সময় তিনি বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়া কেন এ ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে? ইতিমধ্যে কানাডার আদালতে প্রমাণ হয়েছে এ প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি। ড. ইউনূস, হিলারি ক্লিনটন ও টনি ব্লেয়ারের স্ত্রীর ওপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এসে নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্র না করতে পারে।
দেশের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ড. ইউনূস, খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক জিয়া।
নিক্সন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করে ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন, তার সরকারের আমলে কেউ অপরাধ করে রেহাই পাবে না। আমি বিশ্বাস করি যারা গরীবের হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে যারা বিদেশের ব্যাংকে টাকা রেখেছেন, যাদের নাম পানামা পেপারস এবং প্যারাডাইস পেপারসে এসেছে, শিগগিরই দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, যারা দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের সহযোগিতায় পদ্মা সেতুর নির্মাণ বানচাল করতে চেয়েছিল, তারাই আজ বিভিন্ন সমালোচনায় অবতীর্ণ হয়েছে। তাদের মিথ্যাবাদী, ষড়যন্ত্রকারী, দেশের শত্রু হিসেবে দেশের মানুষ চিহ্নিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ, আমাদের গ্রাম এলাকায় মাকাল ফল নিয়ে নানা রকম প্রবাদ আছে। মাকাল ফল বাইরে টুকটুকে সুন্দর, ভেতরে বিড়ালের বিষ্ঠা। বর্তমান সংসদে মাকাল ফলের মতো বিএনপির দুয়েকজন নেত্রী আছেন, যাদের বাইরে সুন্দর, ভেতরে নিষ্ফল। এ ফলের কোনো গন্ধ নেই।
আতিউর রহমান বলেন, বিএনপির অর্বাচীন এ সমালোচকেরা না জেনে, না বুঝে ভারতের ভূপেন হাজারিকা সেতুর সঙ্গে পদ্মা সেতুর তুলনা করে। বিএনপির দুঃশাসনের সময় যারা লন্ডন ছিলেন, তারাই তাদের গডফাদারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে জ্ঞানশূন্য অবস্থায় এখন আবোল-তাবোল কথা বলছেন পার্লামেন্টে। তারা কোথায় কোন গোল্ডেন টয়লেটের সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতুর তুলনা করছেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের মুখই হচ্ছে টয়লেট সমতুল্য।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যার বাবা বঙ্গবন্ধুর খুনি মুশতাকের দল ডেমোক্রেটিক লীগের সেক্রেটারি ছিলেন। ১৫ আগস্টকে যিনি ‘নাজাত দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন, তার সন্তানের মুখে জাতি কী প্রত্যাশা করবে? প্রবাদ আছে কুকর নদীর পানি খেলে নদীর পানি নষ্ট হয় না।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, একজন অর্ধশিক্ষিত যুবক লন্ডনে বসে আছেন। হাওয়া ভবনটিকে তিনি সেখানে নিয়ে গেছেন। তিনি মনোনয়ন দেওয়া এবং কমিটি গঠনের জন্য সেখানেও নাকি টাকা নেন। সেখানে বসে উনি দুর্নীতি করছেন। জঙ্গিবাদের জন্ম দিচ্ছেন।
গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেক রহমান এমন দাবি করে তিনি বলেন, নেতিবাচক কাজ ছাড়া, কোনোদিন ইতিবাচক কাজ তিনি দলের জন্য, দেশের জন্য করেছেন বলে আমার মনে হয় না। আমার অবাক লাগে এ নেতার পেছনে বিএনপির এত প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী নেতারা কীভাবে সমবেত হন, তা ঠিক বুঝতে পারি না।
আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, বিএনপি নেতারা সকালে নাস্তা খেয়ে আওয়ামী লীগ, সরকার ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পদ্মা সেতু বাঙালির অহংকার, আত্মপ্রত্যয়, সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। এই সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্কসহ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। এই সেতুর কারণে অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রবৃদ্ধির হারও বাড়বে।