রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

জিতুর বাবা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শাসিয়েছেন, টাকার প্রলোভন দেন মা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২

মেজাজী জিতু এলাকায় বখাটে হিসেবেই পরিচিত। স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় কাউকেই পাত্তা না দিয়ে বেপোয়ারা চলাচল ছিল তার। এলাকায় সে আবার ‘জিতু দাদা’ হিসেবেও পরিচিত। এই নামে রয়েছে তার ফেসবুক আইডি।

হামলার দিন জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজী এসেই উপস্থিত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সকলকে শাসিয়ে যান। ঘটনার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জিতুর বাবাও উগ্রতা দেখিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে ঘটনার দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে জিতুর বাবার শাসানোর কথা জানান এক শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাকর্মী। এদিন আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা মানবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দারোয়ান আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই হাজির হন জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজী। এসেই তিনি ঘটনার বিষয় জানতে চান উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে। ঘটনা শোনার পর অনেকটা ধমকের সুরেই তিনি বলেন, আমার ছেলে এভাবে এত লোকের মাঝে মারল, এটা কি বিশ্বাস করা যায়! তার কণ্ঠে কোনো নমনীয়তা ছিল না।

এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই শফিক স্যার জিতুকে পেছন থেকে জাপটে ধরে ফেলেন। জিতু তখন ছোটার জন্য হাত-পা ছোড়াছুড়ি করছিল। নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে ওই শিক্ষকের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে জিতু। পরে শফিক স্যার জিতুকে ছেড়ে দিয়ে আহত উৎপল স্যারকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আরো ৫-৭ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল জিতু। পরে কয়েকজন ছাত্রী জিতুর এ কাণ্ডের প্রতিবাদ করলে জিতু তাদের বলে, ‘মারছি তাতে কি হইছে?’ পরবর্তীতে পেছনের গেট দিয়ে জিতু বের হয়ে যায়। এর মধ্যে জিতুর বাবা স্কুলে এসে কোনো সমবেদনা না জানিয়ে উল্টো শাসিয়ে চলে যায়।

তিনি আরো বলেন, আমরা শুনেছি ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলা জিতু এইদিক দিয়েই কিছু ছেলেপেলে সঙ্গে নিয়ে ঘুরেছে, আড্ডা দিয়েছে। ওইদিন রাতেও সে এলাকায় ছিল। যদি পালিয়েই থাকে তাও হয়তো পরের দিন। এর আগেও ইভটিজিং, চুল বড় রাখা, বেয়াদবীসহ বেশ কিছু ঘটনার বিচার জিতুর বিরুদ্ধে এসেছে, সে সময় উৎপল স্যার এ সমস্ত ঘটনার শাসন করেছেন।

টাকা দিয়ে প্রলোভন দেওয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, আমি হাসপাতালে ছিলাম। আইসিইউতে উৎপল কুমারকে দেখে বের হওয়ার সময় বোরকা পড়া এক নারী এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে, স্যারের অবস্থা কি? আমি বললাম ভালো না। তিনি আবার আমার পিছপিছ এসে আমাকে বলে, চিকিৎসা যা করার করেন, আমরা দেখব। তখন আমি বলি আপনি কে? তিনি বলেন, তিনি জিতুর মা। সঙ্গে আরেকজন বয়স্ক মহিলা ছিলেন তিনি জিতুর দাদি। পরে শুনেছি ওই সময় জিতুর বাবাও হাসপাতালে গিয়েছিলেন কিন্তু আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। তাদের কোনো কথা না শুনে আমি চলে এসেছি।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যান। রবিবার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.