রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন

‘প্রধানমন্ত্রীকে ততবার স্যালুট জানাব, যতবার পদ্মা পাড়ি দেব’…

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই ঢাকার নামকরা এক স্কুলের শিক্ষিকা তাসলিমা সুমির। পদ্মা সেতুর বিষয়ে তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যতবার পদ্মা পাড়ি দেব, ততবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্যালুট জানাব, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব।’

তিনি বলেন, টেলিভিশনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার জন্য সকাল থেকেই আজ সাংসারিক কোনো কাজ হাতে রাখেননি। অবশ্য এর আগের দিন তার আইনজীবী স্বামীও বলে দিয়েছিলেন, আজ সকালে কোনো কাজ না রাখার জন্য।পরিবারের সবাই মিলে টিভির সামনেই যাতে বসে যেতে পারেন।

সুমি বলেন, মুগ্ধ হয়েই তারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেছেন। এতবড় কর্মযজ্ঞ শেষ করা এবং চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাজারবার স্যালুট জানিয়েছেন।

তাসলিমা সুমির মতো দেশের কোটি মানুষের মনে আজ আনন্দের ঝিলিক এই পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর এই সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। এই সেতুকে ঘিরে নানা মানুষের নানান প্রতিক্রিয়া।

রাজধানীর পল্টনে জুতা সেলাই এবং পালিশ করেন রাম দাস। পদ্মা সেতু নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এতবড় একটা কাজ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, সেতুটি দেখার খুবই ইচ্ছা রয়েছে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছি, একবার এই সেতু দেখতে যাবই।’

ফকিরাপুল কাঁচাবাজারে তরকারি বিক্রেতা আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার বাড়ি খুলনা, গ্রামের বাড়ি যাওয়া-আসার সময় ফেরিতেই কাটাতে হতো কয়েক ঘণ্টা। অনেক সময় সকালে রওনা দিলে গন্তব্যে পৌঁছতে রাত হয়ে যেত। এখন আর এই সময়টা লাগবে না। চাইলে সকালে ঢাকায় এসে আবার বিকালের মধ্যেই বাড়ি চলে যাওয়া যাবে। ’এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর টেইলারিং শপের কর্মচারী স্বপন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই পদ্মা আমার ভাইকে কেড়ে নিয়েছে। লঞ্চ দুর্ঘটনায় তাকে জীবন দিতে হয়েছে। আরও আগে যদি এই পদ্মা সেতু হতো, তাহলে আমাকে ভাই হারা হতে হতো না।’ তিনি জানান, তার বড়ভাই মাখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। লঞ্চ দুর্ঘটনায় সে তার ছোট্ট দুটি সন্তান, স্ত্রী আর বৃদ্ধ মা-বাবাকে রেখে পরপারে চলে গেছেন। এরপর অভাবের সংসারের পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তাকেই তুলে নিতে হয়েছে। এই সেতু আগে হলে হয়ত তাদের পরিবারকে এই দুর্দিন দেখতে হতো না।

ভারতের একটি রাজ্যে পড়াশোনা করা এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘পদ্মা সেতু সম্পর্কে আমার ছেলে গত রাতে আমাকে ফোন করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় তার আনন্দের সীমা নেই। কারণ এই সেতু উদ্বোধনের ফলে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টায় সে কলকাতা থেকে ঢাকা চলে আসতে পারবে।’

রাজধানীতে একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আবদার করেছে তাদেরকে পদ্মা সেতু দেখিয়ে নিয়ে আসতে হবে। একই কথা বলেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সল্প আয়ে চাকরি করা এক অভিভাবক। তিনি বলেন, তার স্ত্রী ও সন্তান আবদার করেছেন- তাদের একদিন পদ্মা সেতুতে নিয়ে যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ প্রমত্তা পদ্মা নদীর বুকে বহু প্রত্যাশিত পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করেন। তিনি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আজ সকালে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন। রোববার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ সরাসরি সড়কপথে ঢাকায় যেতে পারবেন। এর মধ্যদিয়ে তারা ফেরি ঘাটের যন্ত্রণাদায়ক দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। তারা এখন এ সেতুর ওপর দিয়ে মাত্র ছয় মিনিটে পারাপার হবেন।

স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু কেবলমাত্র রাজধানী ঢাকা ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগই স্থাপন করেনি বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক সংযোগ ও বাণিজ্যের দ্বার খুলে দিয়েছে।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.