বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বর্তমানে দেশে ১৫টি মোবাইল ফোন কোম্পানি তাদের মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগির ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ মোবাইল ফোন রপ্তানি করব।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাজেট ২০২২-২৩ : তারুণ্যের দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আইসিটি সেক্টরের ভূমিকা ও সরকারের পরিকল্পনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী চতুর্থ শিপ্ল বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের তরুণদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই।
তারুণ্যের সম্ভাবনাকে শক্তিতে পরিণত করতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যার ফলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বুয়েটের কম্পিউটারকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলী এবং ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার রাসেল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপকমিটির সদস্য সুফি ফারুক ইবনে আবু বকর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে জনগণের সরকার তা এবারের বাজেটের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি আইসিটি সেক্টর নিয়ে বাজেটপূর্ব অনেক সুপারিশ করেছিল, তা এবারের বাজেটে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের তরুণরা চাকরির পেছনে ছুটবে না, বরং চাকরি দেবে এ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আইটি সেক্টরে শুধুমাত্র আমদানিকারক দেশ না থেকে উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আমরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছি। এখন আমরা আইটি পণ্য ও সেবায় রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা তরুণদের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশে ১৫টি মোবাইল ফোন কোম্পানি তাদের মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগির ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ মোবাইল ফোন রপ্তানি করব। আমাদের নিজস্ব পণ্য উৎপাদন করা এবং বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবারের বাজেটে যুগান্তকারী কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। উদাহরণ হিসেবে এবারের বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশনের জন্য ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা এবং ২৫ হাজার নারীকে আগামী এক বছরের মধ্যে আইটি সেক্টরে দক্ষ করে গড়ে তোলার কথা জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে ইঞ্জিনয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ তরুণ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখছে। গত ১৩ বছরে ২০ লাখ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে আইসিটি সেক্টরে। দেশের সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার বিশ্ববাজারে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। দেশের শিক্ষিত তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরিত করা গেলে আমরা ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও ২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো।
আলোচক হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, গ্রাম ও শহরে এক রেটে ইন্টারনেট সেবা দিতে হবে এবং ইন্টারনেটের কোয়ালিটি অফ সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শহরগুলোকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রথমেই একটি পাইলট প্রজেক্ট হাতে নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আইসিটিতে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়ক টেকনোলজি, সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতামুক্ত রাখা প্রয়োজন।