যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে তৃতীয় ম্যাচে এসে অধরা জয়ের দেখা পেল নিগার সুলতানার দল। হামিল্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই সুযোগটি সত্যিই কাজে লাগালো টাইগ্রেসরা। পাকিস্তানকে ৯ রানে হারিয়ে তুলে নিলো বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়।
হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ২২৫ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান নারীরা।
অন্যদিকে ওয়ানডে বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা ১৮ ম্যাচ হারল পাকিস্তান। সর্বশেষ ২০০৯ সালে বিশ্বকাপে জয়ের মুখ দেখেছিল তারা।
ম্যাচের তখনও তিন ওভার বাকি। টিভি পর্দায় দেখা গেল লাল-সবুজের পতাকা উড়ছে। কেন উড়ছে? নিউজিল্যান্ডে ওড়া ওই পতাকা যে বাংলাদেশের, সেটা বলার প্রয়োজন ছিল না আর।
বাংলাদেশের মেয়েরা প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে তাসমান সাগর পাড়ে। আড়ালে থাকা মেয়েরা এবার আলোয় বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ জিতল।
এই জয় যেন ফিরিয়ে এনেছে ২৩ বছর আগের স্মৃতি। ছেলেদের বিশ্বকাপের প্রথম জয়টাও এসেছিল এই পাকিস্তানের বিপক্ষে। আকরাম খানরা জিতেছিলেন বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে, নিগার সুলতানাদের বেলায়ও তাই। মিল আছে আরও। দুটি ম্যাচই টস হেরেছিল বাংলাদেশ, ম্যাচগুলো হয়েছে সোমবার।
বাংলাদেশের পক্ষে এবারের ইতিহাস লেখার শুরুটা করেছিলেন শারমিন সুলতানা ও শামিমা সুলতানা। এই দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছিল ৩৭ রান। শারমিন ৩০ বলে ১৭ রান করে সাজঘরে ফেরত গেলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ছয় চারে ৫৫ বলে ৪৪ রান করে হাফ সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়েন আরেক ওপেনার শামিমা। একই আক্ষেপে নিয়ে আউট হন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও। ৬৪ বলে তার ব্যাটে আসে ৪৪ রান।
তবে বাংলাদেশের বড় ইনিংসের বড় কৃতিত্বটা ফারজানা হকের। পাঁচ চারে ১১৫ বলে ৭১ রান করেন তিনি।
নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এটাই সবচেয়ে বড় সংগ্রহ।
পাকিস্তানের পক্ষে ১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন নাসরা সান্ধু। বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল হতাশার। কোনো উইকেট না হারিয়েই ৯১ রান করে ফেলে পাকিস্তান। চিন্তা বাড়ে বাঘিনীদের।
কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো যে এই মেয়েদের নেশা। নাহিদা খানকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন রুমানা আহমেদ। এরপর অধিনায়ক বিসমাহ মারুফকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের মুঠো থেকে ধীরে ধীরে ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন সিদরা আমিন।
মাঝে কয়েকটি সহজ ক্যাচ মিস শঙ্কা বাড়াচ্ছিল আরও বেশি। কিন্তু বিসমাহকে শারমিন আক্তারের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন জাহানারা আলম। এরপর শুরু হয় উইকেট যাওয়ার মিছিল। ফাহিমা খাতুন ৩টি ও রুমানা আহমেদ নেন ২ উইকেট।