প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের চার বছর মেয়াদী পরিকল্পনার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পেঁয়াজের ঘাটতি কমেনি। এ জন্য কৃষকের প্রণোদনা বাড়ানো এবং বছরব্যাপি পেঁয়াজ উৎপাদনের পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিস্টরা।
দেশে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি থাকে যা আমদানি করে পূরণ করা হয়। কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎ করে ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০০ টাকায় দাঁড়ায়। এরপর পেঁয়াজের চাহিদা পূরণে পরনির্ভরশীলতা কাটাতে চার বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নেয় কৃষি মন্ত্রনালয়। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ঘাটতি কমেনি। ফলে পেঁয়াজের বাজার প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, এখন দাম হচ্ছে ৫৫ টাকা। সব ধরনের জিনিসপত্রের দামই উর্ধ্বগতি। বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধদিপ্তরের তথ্যমতে, গত দুই বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ৭ লাখ মেট্রিক টন। এই সময়ে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে প্রায় ৯ লাখ টন। সে হিসেবে ঘাটতি আরো বেড়েছে।
ব্যবসায়িরা জানান, এক যুগেও দেশে পেঁয়াজের এই ঘাটতি মিটেনি। শ্যামবাজার পেঁয়াজ-রসুন সমিতির প্রচার সম্পাদক মোহাম্দ সহিদুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সঙ্গে বীজও আমদানি করলে ঘাটতি কমতে পারে। এই কথা আমরা বার বার কর্তৃপক্ষদের জানানো হলেও আমাদের কথা কেউ শুনে নি। পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েই যায়। আর কিছুদিন পর পর বাজারে অস্বাভাবিকতা শুরু হয়।
উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা বাড়ানো এবং বছরজুড়ে পেঁয়াজ চাষের পরামর্শ দিয়েছেন বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা।
এসিআই কোম্পানীর সিইও এফ এইচ আনাসারী বলেন, একদিকে আমাদের মজুদের জন্য স্টোরেজ বাড়াতে হবে,অন্যদিকে আমাদের বর্ষাকালে উৎপাদন বাড়াতে হবে। বর্ষাকালে আমরা পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারি না।
একই সাথে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌড়াত্ম্য কমানোর তাগিদ দেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক। তিনি বলেন, কিছু গোপন খরচ এবং চাঁদাবাজির কারণেই ঢাকাতে পেঁয়াজের দাম বেশি। কৃষকদের কাছে এখনও কিন্তু পেঁয়াজ কম দামেই কেনা হয়। এছাড়া ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।