গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনা বলেছেন, সরকারের নতুন নির্বাচন কমিশন আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত সার্চ কমিটি গঠন করা। যারা আরেকটি সরকার অনুগত নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করবে। যে কমিশন আগামী নির্বাচনে সরকারি দলের পক্ষে রাবার স্ট্যাম্প হিসাবে কাজ করবে এবং সরকারি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে ‘প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন আইন-জনপ্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ সব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।
জোটের পক্ষ থেকে আইন পাশের প্রতিবাদে ২৯ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, রাজনৈতিক মতৈক্য ছাড়া সরকার ও সরকারি দলের নীল-নকশা অনুযায়ী যেভাবে সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠিত হতে যাচ্ছে তা রাজনীতিতে অবিশ্বাস-অনাস্থা, বিরোধ-বিভাজন আরো বাড়িয়ে দিবে। নির্বাচনকেন্দ্রীক সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ব্রতীর নির্বাহী প্রধান শারমিন মোর্শেদ, বাঙলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নেতা আবদুল্লাহ কাফি রতন প্রমুখ।
সভায় ড. শাহদীন মালিক বলেন, কথিত নির্বাচন আইনকে ‘সরকারি দলের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল নিশ্চিতকরণ আইন’ বলা যেতে পারে। একইভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকেও ‘বাক স্বাধীনতা রুদ্ধকরণ’ আইন বলা যেতে পারে। একক কর্তৃত্বেই এসব কথিত আইন তৈরী হচ্ছে, যা লজ্জাকর ও গ্লানিকর এবং মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপনকে এখন আইনি আবরণ দেওয়া হচ্ছে। বাস্তবে অনুসন্ধান কমিটির যোগ্য ব্যক্তিদের অনুসন্ধানের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন আইন নামে যা হচ্ছে, তা নিতান্তই আনুষ্ঠানিকতা; সবকিছু হবে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী।
শারমিন মোর্শেদ বলেন, আইন প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়াই অস্বচ্ছ। সরকারের এই তৎপরতায় জনগণের কোনো আস্থা নেই। দেখে মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনার নামে আমরা আবার মেরুদণ্ডহীন কিছু লোক পাব।