বিরোধিতা উপেক্ষা করে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বিলটি অধিকতর পরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
টানা পাঁচদিন বিরতির পর আজ রবিবার চলতি সংসদের ১৬তম অধিবেশন (শীতকালীন) আবারও শুরু হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় সীমিত সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতিতে এই অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন ও জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
পরে আইন প্রণয়ন কার্যক্রম শুরু হয়।
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপনের প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেন, এই আইন পাসের মাধ্যমে চলমান সংকটের কোনো সমাধান হবে না। সার্চ কমিটিকে বৈধতা দিতে অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার বিলটি এনেছে। তাই বিলটি প্রত্যাহার করে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে নতুন বিল আনতে হবে।
জাবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই ওই বিলটি আনা হয়েছে। তারাও সংবিধানের আলোকে বিলটি প্রণয়নের দাবি জানিয়ে ছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছরে যে কাজটি হয়নি, এই বিলটি পাসের মাধ্যমে সরকার সেই কাজটি করতে যাচ্ছে।
পরে বিএনপির প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায় এবং মন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। ওই বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে একটি সার্চ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। যে কমিটির প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। সদস্য থাকবেন হাইকোর্টের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতির মনোনীত দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তাদের বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর বয়স হতে হবে। এছাড়া তাদের সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এই বিলটি ছাড়াও আজ অধিবেশনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০২২’ ও স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) বিল-২০২২ এবং বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী ‘বাণিজ্য সংগঠন বিল-২০২২’ উত্থাপন করেন।