আগামী ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিন তিতাস গ্যাসের আওতাভুক্ত এলাকা বৃহত্তর ঢাকা ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের সমগ্র এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকবে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারিগরি কারণে ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে আগামী ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত তিতাস গ্যাসের আওতাভুক্ত এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপ বিরাজ করতে পারে। সেই সঙ্গে গ্রাহকদের সাময়িক এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট করে একই তথ্য জানিয়েছেন।
সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহৎ বিতরণ সংস্থা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের বর্তমান গ্রাহকসংখ্যা ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৮।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, সামিটের পর বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের সংস্কারের জন্য ঘাটতি সৃষ্টির শঙ্কা করছে জ্বালানি বিভাগ। শেভরন বাংলাদেশ পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা সংস্কারে গেছে। এতে প্রতিদিন অন্তত ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হতে পারবে না। এছাড়া সামিটের এলএনজি টার্মিনালের মুরিং ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ঘাটতি রয়েছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে দৈনিক গ্যাস ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, আমরা মনে করেছিলাম আজ থেকে সংকট শুরু হবে। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে টের পাওয়া যায়নি। কাল থেকেই গ্যাস ঘাটতি হতে পারে। তবে এরমধ্যে কয়েকটি কূপের ওয়ার্কওভার শেষ হওয়ার কথা। এটি হয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, বিবিয়ানার কারণে ৫০ এবং সামিটের এলএনজি টার্মিনালের কারণে আরও ৪৫০ অর্থাৎ সবে মিলিয়ে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের ঘাটতি হবে।
গত ১৮ নভেম্বর সামিটের এলএনজি টার্মিনালের মুরিং ছিঁড়ে যায়। এতে টার্মিনালটিতে কোনো এলএনজিবাহী কার্গো ভিড়তে পারছে না।
মহেশখালীর দুটি ভাসমান টার্মিনাল দিয়ে দিনে এক শ’ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। বছরের কোনও কোনও সময় দিনে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাসও সরবরাহ করা হয়। শীতে পাইপলাইনের ভেতর পানি জমায় গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এ ছাড়া তাপমাত্রা কমে যাওয়ায়ও এই সমস্যা দেখা দেয়। এখনও শীত জেঁকে না বসায় ঘাটতিটা চোখে পড়ছে না। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ জানুয়ারির আগে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।
তিতাসের এমডি হারুনুর রশীদ মোল্লা বলেন, আমাদের আসলেই কিছু করার নেই। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি মেরামত হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। এছাড়া বিবিয়ানার সংস্কার শুরু হওয়ায় আরও কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে।