তুমি একবার বেড়াতে এসো, তোমার মেয়েটা কোথায় বিয়ে দিয়েছ দেখে যাও মা।’ মেয়ের বাড়িতে মা এলেন ঠিকই; কিন্তু লাশ হয়ে। লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডে ফাতেমার মায়ের করুণ মৃত্যু হয়েছে।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনোয়ারা (৬০) নামের আরো একজনের মরদেহ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা। শনিবার সকালে নিহতের মেয়ে ফাতেমা আক্তার কফিনে লাগানো মায়ের ছবি দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন। মায়ের কফিন দেখেই শুরু হয় তাঁর আহাজরি। ‘মায় একি হলো! মা আইল লাশ হয়ে। ও মা, তুমি একবার ফাতেমা বলে ডাক দাও।’
নিহত মনোয়ারা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা গ্রামের বাসিন্দা।তিনি তাঁর মেয়ে ফাতেমার শ্বশুরবাড়ি বরগুনার ঢলুয়ায় বেড়াতে যাচ্ছিলেন। এ সময় নিহত মনোয়ারার সাথে তাঁর স্বামী বেলাল হোসেন ও মেয়ে আমেনা ছিলেন। তাঁরা এখন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মেয়ে ফাতেমা বলেন, ‘মা অনেক দিন ধরেই আমাদের বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) বেড়াতে আসতে চেয়েছেন। কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে সুযোগ হচ্ছিল না। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুর থেকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ওঠেন। পরে লঞ্চে আগুন লাগলে বাবা ও বোন লাফিয়ে নদীতে নামলেও মা বের হতে পারেননি। মায়ের অনেক শখ ছিল আমার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে আসবে। ভাগ্য কী নির্মম, মা এসেছেন ঠিকই তবে লাশ হয়ে।’
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০-এ। নিহত ৪১ জনের ৩৭ জনই বরগুনার বাসিন্দা। এ নিয়ে আটটি মরদেহ শনাক্ত করা হয়।