তিনদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে লোকালয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে। উপজেলার সুরমা, বগুলা, নরসিংপুর ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের ২০-২৫ গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অর্ধ লাখ মানুষ।
মাঠঘাট ও গোচারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশুপক্ষী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিপর্যস্ত কৃষকরা। এসব এলাকায় সদ্য বপনকৃত অধিকাংশ বীজতলা নিমজ্জিত হওয়ায় আগামী অগ্রহায়ণী ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন চাষীরা।
সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা খরস্রোতা চিলাই, মৌলা ও খাসিয়ামারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে বাংলাবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ চৌধুরীপাড়া, পেকপাড়া, চিলাইপাড়, পুরান বাঁশতলা, বগুলাবাজার ইউনিয়নের আলমখালি, ইদুকোনা, ক্যাম্পের ঘাট ও ভোলাখালিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নরসিংপুর ইউনিয়নের চেলা ও মরা চেলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বুধবার দিনভর উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ উপজেলার আলমখালী এলাকার ৯০টি পরিবারকে নগদ ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বগুলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল হক জুয়েল, বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
স্থানীয় সমাজসেবক আমির উদ্দিন বলেন, নরসিংপুর ইউনিয়নের, শ্যামারগাঁও, শ্রীপুর, তেরাপুর, হাতিরভাঙা, বাংলাবাজার ইউনিয়নের পূর্ব ঘিলাতলী গ্রামের একাংশের বাড়িঘর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে তলিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে কর্মহীন মানুষ এখন চরম বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় প্রভাষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বগুলাবাজার ইউনিয়নের আলমখালি গ্রামে চিলাই নদীর বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় পানিতে তলিয়ে গেছে ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, বসতবাড়ি ও অসংখ্য পুকুর। দুর্যোগ মোকাবেলায় খুব দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামত করা প্রয়োজন।
নবাগত দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, আলমখালী বেড়িবাঁধ ভাঙা ছিল তা আমার জানা নেই, তবে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।