মেঘ-বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে বিষখালী নদীর তীরবর্তী উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার মানুষ। নদী সংলগ্ন এ উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বেতাগী পৌরসভা ও কয়েকটি ইউনিয়নের জন্য ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য কোনো টেকসই রক্ষা বাঁধ নেই।
দীর্ঘদিন ধরে এ উপকূলীয় জনপদের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। পৌরসভাসহ আশেপাশের কয়েক ইউনিয়নের গ্রামের বিপুলসংখ্যক মানুষ।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়েছে ধমকা বাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টি। এরই মধ্যে পায়রা এবং মংলা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর দূরবর্তী বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এ অঞ্চলের অবস্থান পায়রা এবং মংলা সমুদ্রবন্দরের মধ্যখানে হওয়ায় এখানকার মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসকে ঘিরে আতংক বিরাজ করছে। বিষখালী নদীর কোলঘেঁষে মানুষরা রয়েছে চরম আতঙ্কে।
বুধবারের ভরা পূর্ণিমা ও ইয়াসের প্রকোপে বিষখালী নদীর জোয়ার আরো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের নড়বড়ে বেড়িবাঁধ দিয়ে নদীর উত্তাল ঢেউয়ের পানি দেখে আতঙ্কে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে বেতাগী পৌর শহরকে রক্ষার জন্য ২০০১ সালে বিষখালী নদীতে ব্লক ফেলা হলেও এরপর তেমন কোনো কাজ হয়নি।
২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন ‘সিডর’ ও ২০১১ সালের ২৫ মে আইলায় ভেঙে যাওয়া শহর রক্ষা বাঁধ স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য ২০১১ সালে পুনরায় উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুধু ব্লক তৈরি করে বাঁশ, বালি ও বস্তার চট রেখে লাপাত্তা হয়ে যায়।
গত ২০১৭ সালের ২০ মে বিষখালী নদীর তীব্র ভাঙন থেকে বেতাগী উপজেলাকে রক্ষা করতে বেতাগী পৌর শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
তৎকালীন স্থানীয় সরকার বিভাগের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক একটি প্রকল্প অনুমোদন করে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একটানা ৩ বছর অতিক্রম হলেও প্রকল্পটি এখন কেবল শুধুই কাগজে-কলমে দেখা যায়।