মাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজান। বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য উৎসবের মাস হিসেবে ধরা হয় রমজানকে। আর রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করে নারীরা। রোজা, প্রার্থনী,কুরআন তেলোয়াত,প্রার্থনা , সবার জন্য মজাদার ইফতারের পাশাপাশি রোজকারের রান্না সবই একজন নারীকে করতে হয়। গৃহিণী হোক আর কর্মজীবী নারী হোক সবার কাজের চাপ অনেক বেশি বেড়ে যায় রমজান মাসে। তবে কর্মজীবী নারীর জন্য রমজান মাস অনেকটা চ্যালেঞ্জের মত হয়ে দাঁড়ায়। সবকিছু সমন্বয় করে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
নারীরা কখনো কন্যা, কখনো বোন,কখনো মা, কখনো স্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করে। রমজানে শারীরিক ও মানসিক দুইভাবে নারীকে সুস্থ থাকতে হয়। রমজান কী, কেন রোজা রাখতে হয় এ বিষয়গুলো বাড়ির ছোটদের বোঝানোর দায়িত্ব পালন করে মা রুপী নারীরাই।
অফিস ও গৃহাস্থলির কাজ করে রমজানে সময় অনুযায়ী চলা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে রমজান অনেকটা সহজ হতে পারে একজন নারী বা একজন কর্মজীবী নারীর জন্য। আপনার কাজের পরিধি, কাজের ক্ষমতা অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন। কখনো বেশি উচ্চাকাঙ্খা করবেন না। আপনি আপনার দায়িত্ব অনুযায়ী পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যান।
সহজ করে করা:
ইফতারে প্রতিদিন একাধিক মুখরোচক খাবার আয়োজনের কোন দরকার নেই। কেবল পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় সব উপাদান রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন।
প্রস্তুত রাখা:
রোজার আগেই সব রেডি করে রাখুন এতে করে কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। প্রথমত পেঁয়াজ, রসুন কেটে রাখুন। প্রয়োজনীয় মশলা করে রাখনু, সেই সঙ্গে মাছ, মাংস কেটে ধুয়ে রাখুন। শরবত আগে থেকে তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
জিনিস গুছিয়ে রাখুন:
রমজান মাসে প্রয়োজনীয় জিনিস যেনো হাতের কাছে পাওয়া যায় তাই সবকিছু জায়গামত সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন।
পরিকল্পনা করা:
সকাল থেকে নোট করে নিন কী কী করতে হবে আর সেই অনুযায়ী কাজ করুন। যে কাজগুলো বেশি জরুরি সেগুলো আগে করুন যেগুলো কম জরুরি সেগুলো সময় পেলে পরে করুন।
বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন:
এখন করোনার সময় তাই খুব দরকার না পড়লে বাড়িতে থাকার চেষ্টা করুন। তবে অফিস থাকলে বাইরে বের হতেই হবে। আত্মীয় বা বন্ধুদের সাথে দেখা সাক্ষাতের প্রয়োজন হলে তাদেরকে বাড়িতে ডাকুন। সবাই মিলে ইফতার করুন। সেক্ষেত্রে আপনার কাজের সুবিধার্থে একজন সাহায্যকারী রাখুন আপনার সাথে।
বিশ্রাম:
এত সব কাজের মধ্যে অবশ্যই বিশ্রামের জন্য সময় রাখুন। কারণ একটানা কাজ করতে যেয়ে শরীর ক্লান্ত হলে পরে আর কিছুই করতে ভালো লাগবেনা।
স্বাস্থ্যকর খাবার:
সেহেরি ও ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খান। ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।
প্রার্থনা:
রমজানের মূল উদ্দেশ্য প্রার্থনা। সারাদিনের সব কাজের অযুহাতে কখনোই নামাজ বাদ দেওয়া যাবে না। সেই সাথে আপনি কোরআন তেলোয়াত, জিকির করুন পবিত্র এই মাসে।
ব্যায়াম:
অনেকেই মনে করেন রমজানে ব্যায়ামের দরকার নেই। কিন্তু ধারণাটি খুব ভুল। ইফতারের পর শরীরচর্চা করলে দেখবেন শরীর সুস্থ থাকবে ও কাজ করার শক্তি পাবেন।
কর্মজীবী নারীর জন্য রমজানে মাসের কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। তবে একটি সুবিধার বিষয় হলো কর্মজীবী নারীরা সময় ভালো ভাবে ব্যবস্থাপনা করতে পারেন।
সময়সূচী ঠিক করুন:
আপনার কাজের সাথে সময় সমন্বয় করে নিন। যাতে করে পরিবারকে উপযুক্ত সময় দেওয়া যায় আবার কর্মক্ষেত্রেও সমস্যা না হয়।
কুরআন ও যিকিরে বিরতি ও পরিবহনের সময়কে কাজে লাগান:
সারাদিনে সময় বের করতে না পারলে অফিস যাওয়া আসার সময় যিকির করুন। যখন কাজ থাকবে না তখন কুরআন শরীফ তেলোয়াত করুন।
পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ:
আপনার কাজকে সহজ করে তুলতে পরিবারের বড় বা ছোটদের সাহায্য নিন।