সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সুসম্পর্ক ও ভালবাসার মর্যাদা ব্যাপক। কুরআন ও হাদিসের বর্ণনাসহ রাসুল (সা.)-এর পবিত্র জীবনে এর অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। দাম্পত্য জীবনে সাধারণ আচার-আচরণে রয়েছে সাওয়াব, কল্যাণ ও ভালোবাসার হাতছানি। যা হতে পারে দুনিয়ার সব মানুষের জন্য গ্রহণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানদারদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপূর্ণ মুমিন ওই ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে ভালো। আর তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপূর্ণ কল্যাণের অধিকারী ওই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীদের সঙ্গে আচার-ব্যবহারে সবচেয়ে ভালো।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২/৪৭২)।
আরেক হাদিসে হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, সবচেয়ে পরিপূর্ণ ঈমানদার ওই ব্যক্তি, যে তার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অধিক নরম ও কোমল হয়।’ (তিরমিজি : ২৬১২)
সংসার জীবন সুখী করতে আল্লাহর রাসুল (সা.) স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণের পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে তার কর্তব্য হলো, কোনো অপছন্দনীয় অবস্থা বা ঘটনার সম্মুখীন হলে উত্তম কথা বলা অথবা চুপ থাকা। আর তোমরা মেয়েদের সাথে সৎ ও উত্তম কথা বলো অথবা চুপ থাকো। কেননা তাদের পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে (বক্র স্বভাব) সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের উপরের দিককার হাড় সবচেয়ে বেশি বাঁকা। যদি তুমি তা সোজা করতে চাও তাহলে তা ভেঙে ফেলবে। আর যদি যেমন আছে তেমন রাখো তাহলে তা বাঁকাই হতে থাকবে। অতএব তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো। (তিরমিজি, ৫/৩৫১১)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ঈমানদার পুরুষ যেন কোনো ঈমানদার নারীর প্রতি (স্বামী স্ত্রীর প্রতি) ঘৃণা-বিদ্বেষ বা শত্রুতা পোষণ না করে। কারণ তার একটি স্বভাব পছন্দনীয় না হলেও অন্য একটি স্বভাব অবশ্যই পছন্দনীয় হবে। (তিরমিজি, ৫/৩৫১২)
রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, স্ত্রী লোককে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে কখনো তোমার সাথে সহজ ব্যবহার করবে না বা সোজ হয়ে চলবে না। তুমি যদি তার বক্রতা মেনে নিয়ে তার নিকট থেকে ফায়দা পেতে চাও তাহলে ফায়দা পাবে। আর যদি বক্রতা সোজা করতে চাও তাহলে তাকে ভেঙে ফেলবে। আর ভেঙে ফেলা অর্থ হলো তালাক। ( তিরমিজি, ৩৫১০)