বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম বিসিএস (১৯৭৩) পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে পদোন্নতি বঞ্চিত যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব পদের ৩৯ মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি এবং সে অনুযায়ী সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের উভয় বিচারপতি স্বাক্ষরের পর এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার। ২০০১ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়া এই ৩৯ কর্মকর্তার করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট গতবছর পহেলা নভেম্বর প্রকাশ্য আদালতে রায় ঘোষনা করলেও সম্প্রতি লিখিত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, অবসরে যাওয়া এসব কর্মকর্তা ১৯৯৮ সালে করা ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/ নিয়োগের নীতিমালা’ অনুযায়ী পদোন্নতিসহ আনুসাঙ্গিক সুবিধা ও পদমর্যাদা পাবেন। তাদের ক্ষেত্রে ২০০২ সালে করা ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/ নিয়োগের বিধিমালা’ প্রযোজ্য বা কার্যকর হবে না।
বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে প্রথম বিসিএস (১৯৭৩) পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়াদের পদোন্নতি জন্য ১৯৯৮ সালে একটি নীতিমালা করে সরকার। এরপর ১৯৯৯ সালে সরকার জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি পদোন্নতির তালিকাও করে। পরবর্তীতে তাদের কেউ কেউ পদোন্নতিও পান। ১৯৯৮ সালের নীতিমালার আলোকে পদোন্নতি পেয়ে তাদের কেউ কেউ যুগ্ম সচিব পর্যন্ত হয়েছেন। কিন্তু পদোন্নতির বিষয়ে ২০০২ সালে নতুন মানদণ্ড করে বিধিমালা করে সরকার। এতে ১২ উপ-সচিব এবং ২৭ জন যুগ্ম সচিব (তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা) মোট ৩৯ জন পদোন্নতি বঞ্চিত হন। এরপর ২০০২ সালের ওই বিধিমালা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালে রিট আবেদন করেন পদোন্নতি বঞ্চিত যুগ্ম সচিব মো. সাইফুজ্জামান, মো. আমিরুল ইসলাম ও উপ-সচিব মো. খলিলুর রহমান। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।