দাম্পত্য জীবনে সবাই সুখী হতে চায়, তবে সবার সংসার তো আর সুখের হয় না। বর্তমানে বেশিরভাগ বিয়েই দাম্পত্য কলহের কারণে ভেঙে যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদের মূল কারণগুলোর মধ্যে আছে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগের অভাব, শারীরিক চাহিদায় অপূর্ণতা কিংবা মানসিকভাবে নির্যাতন ইত্যাদি।
বর্তমান সবাই কর্মব্যস্ত সময় পার করেন সারাদিন। এর বিরূপ প্রভাবই পড়ে দাম্পত্য জীবনে। বিশেষ করে অনেক পুরুষই সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করায় স্ত্রীর উপর সেই ক্ষোভ বা রাগ প্রকাশ করেন। এর থেকে সংসারে অশান্তি আরও বাড়তে থাকে।
জানলে অবাক হবেন, স্ত্রীর সুখের উপরই নাকি সংসারের সুখ-শান্তি নির্ভর করে। এমনটিই জানাচ্ছে গবেষণা। সংসারে সুখী হতে স্বামীর সুখের চেয়ে স্ত্রীর সুখ বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করছেন গবেষণায়।
গড়ে ৩৯ বছর বিবাহিত এমন ২৯৪ দম্পতির উপর পরিচালিত হয় গবেষণাটি। তাদের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যে নারীরা দাম্পত্য জীবনে সুখী তারা ৬ পয়েন্টের মধ্যে বেশিরভাগই ৫ পয়েন্ট রেটিং দিয়েছেন। অন্যদিকে দেখা যায়, স্বামীদের রেটিং তাদের স্ত্রীদের চেয়ে বেশি ইতিবাচক ছিল!
বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানান, দীর্ঘমেয়াদী মিলনে একজন স্ত্রী যত বেশি সন্তুষ্ট হন ঠিক একজন স্বামীও তার জীবন নিয়ে ততই বেশি সুখবোধ করেন। একজন সুখী নারী তার সঙ্গীকে খুশি রাখেন।
নারীদের এই বিষয়ের সঙ্গে মনোবিজ্ঞান জড়িত। দাম্পত্য জীবন যেসব নারীরা সুখী তারা সঙ্গীর জন্য আরও বেশি কিছু করার প্রবণতা রাখে। যা স্বামীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্ত্রীর সুখের মাত্রা কমে যায়। অন্যদিকে স্ত্রী অসুস্থ হলে স্বামীর সুখের মাত্রা পরিবর্তন হয় না। পুরুষের খারাপ লাগলে নারীরা সব সময় তার যত্ন নেয়। তবে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বামী একই মানসিক চাপ অনুভব করেন না।
প্রফেসর পল ডলান তার বই ‘হ্যাপি এভার আফটার: এস্কেপিং দ্য মিথ অব দ্য পারফেক্ট লাইফ’ এ দাবি করেছেন, নারীদের তুলনায় পুরুষরা বিবাহ থেকে বেশি লাভবান হন। বিবাহিত নারীরা সংসারের চাপে কম বাঁচেন, অন্যদিকে বিবাহিত পুরুষরা বেশি দিন বাঁচেন।
এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, দাম্পত্য সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করতে ও সংসারে সুখ আনতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই অবদান রাখতে হবে। আর স্বামীদের দায়িত্ব স্ত্রীকে সুখে রাখা। তাহলেই সংসার হবে সুখের।